গরমে তৃপ্তিদায়ক রসালো ফল তরমুজ। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে পায়রা নদীর তীরে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় এই রসালো ফল তরমুজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন চাষিরা। গত বছরের চেয়ে এবার ১০ গুন বেশি আবাদ হয়েছে তরমুজ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ক্ষেতগুলোতে তরমুজের ব্যাপক ফলন দৃশ্যমান। ফলনও বেশ ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে। বড় আকারের তরমুজের ওজন ইতোমধ্যে ৮-১০ কেজি হয়ে গেছে। আর ৮-১০দিন পরেই তরমুজের আকার আরও বড় হলে বাজারে ভারো দামে বিক্রির আশা করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর উপজেলায় ২০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়েছিল। চলতি বছরে প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সবসময় কৃষকদের খোজ-খবর নিচ্ছেন এবং তাঁদের পরামর্শে অনেক নতুন নতুন কৃষক তরমুজ চাষে ঝুকছেন বলে জানান তরমুজ চাষীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কেউ পানি সেচ দিচ্ছেন, কেউবা আবার নিড়ানি দিয়ে তরমুজ গাছের গোড়া ঠিক করে দিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার রোগ প্রতিরোধের জন্য ছত্রাক নাশক প্রয়োগ করছেন। আবহাওয়া তুলনামূলক অনুকূলে থাকায় এবং অধিক পরিমানে লাভের আশায় দিন রাত পরিশ্রম করছে তারা। এখন তাদের চোখে শুধুই স্বপ্ন আর স্বপ্ন। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ।এলাকায় রয়েছে তরমুজের ক্ষেত। সেসব জায়গায়ও একই দৃশ্য দেখা যায়


তরমুজ চাষী মো. তোফায়েল বলেন, আমার বাড়ি গলাচিপা। আমি মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ মির্জাগঞ্জ গ্রামের বিস্তীর্ণ চরে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে ১২৮০ শতক জমি (স্থানীয় মাপের ৮ কানী) লিজ নিয়ে ১৬-১৮ লক্ষ টাকা খরচ করে তরমুজ চাষ করছি। গত বছর তরমুজ ভালো হওয়ায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি এ বছরও তরমুজ চাষ করেছি। তবে এবার বৃষ্টি না হওয়ায় অতিরিক্ত খরচও হয়েছে সেচের জন্য এবং দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণেও খরচ অনেক বেশি হয়েছে। তবে ক্ষেতে খুব ভালো ফলন ধরেছে। আশা করছি এতে আমি লাভবান হবো ।
উপজেলার ঘটকের আন্দুয়া গ্রামের মো. বাবুল, সেলিম মৃধা ও রজব আলী আকন বলেন, তরমুজ চাষে খরচ কম ও সহজ। তাই তরমুজ চাষ করেছি। গাছগুলোর একটু বাড়তি যতœ নিতেছি যাতে ফলন ভালো হয়। তরমুজ আকারে বড় এবং সুস্বাদু হলে বাজারে চাহিদাও অনেক বেশি থাকে। তাই তরমুজ ক্ষেতে ব্যস্ত সময় পার করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আরাফাত হোসেন জানান, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর মির্জাগঞ্জে অনেক বেশি তরমুজ চাষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত তরমুজ ক্ষেত পরিদর্শন করে চাষীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে কৃষকরা অনেক লাভবান হবেন বলে আমরা আশাবাদী।