মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে গত ১৭ মাসে রাজস্ব আয় হয়েছে ১০ কোটি ২ লাখ ৭১ হাজার ৮৬৫ টাকা। এ সময়কালে লাউয়াছড়ায় পর্যটক এসেছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩৪৪ জন।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের ওয়াইল্ডলাইফ রেঞ্জার মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ২০২২ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ১৭ মাসে লাউয়াছড়া জাতীয় পার্কে দর্শনার্থীদদের কাছে টিকেট বিক্রি, বিদেশীদের কাছে টিকেট বিক্রি, গাড়ি পার্কিং, বনভোজন, স্যুটিং প্রভৃতি বাবদ এই রাজস্ব আয় হয়। এই সময়কালে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩৩৪ জন দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী লাউয়াছড়া ভ্রমনে এসেছেন।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা বিভাগ সুত্র জানায়, জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণীর মহামিলনের এবং নান্দনিক সৌন্দর্যের অন্যতম স্থান লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। রেইনফরেস্ট খ্যাত বাংলাদেশের বিখ্যাত বনগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ বন। এ জাতীয় উদ্যানটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জীববৈচিত্র্যপুর্ণ বন। ২ হাজার ৭৪০ হেক্টর আয়তনবিশিষ্ট পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনের অভ্যন্তরে ১ হাজার ২৫০ হেক্টর এলাকাজুড়ে এই উদ্যানের অবস্থান।

বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) (সংশোধন) আইন ১৯৭৪ অনুসারে ১৯৯৬ সালে এটিকে ‘জাতীয় উদ্যান’ হিসেবে ঘোষনা করা হয়। অদ্ভুত এক নির্জন পরিবেশে অবস্থিত মিশ্র চিরহরিৎ এই উদ্যানে রয়েছে ৪৬০ প্রজাতির জীব। এরমধ্যে ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৪ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ১৭ প্রজাতির পোকামাকড় ও ২৪৬ প্রজাতির পাখি।

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, এ উদ্যানটি এখন পৃথিবীর মানচিত্রে এক গৌরবময় স্থান দখল করে আছে। বিশ্বব্যাপী বিপন্ন এবং বাংলাদেশে মহাবিপন্ন উল্লুক পৃথিবীর যে ৪টি দেশে দেখা যায় তারমধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম এবং এই লাউয়াছড়া উল্লুকের বৃহত্তম আবাসস্থল। সে কারনে এ উদ্যান উল্লুক দেখার জন্য শ্রেষ্ঠ উদ্যান। তাই এ উদ্যান এখন শুধু পর্যটকদেরই স্থান নয়, এটি এখন এক জীবন্ত ও প্রাকৃতিক গবেষণাগার যেখানে বিশ্ববিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণার জন্য গবেষকরা আসছেন।

এ উদ্যানটি এখন শিক্ষা, গবেষণা, ইকো-ট্যুরিজমসহ ভ্রমনপিপাসুদের চিত্তবিনোদনের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থানে পরিনত হয়েছে। সারা বছরই এখানে পর্যটক-দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে থাকে।