১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে চলমান পর্যটক মৌসুম শুরু থেকে এই প্রথম হাজারো পর্যটকের ঢল নেমেছে। দীর্ঘদিন হরতাল ও অবরোধে পর্যটক শূন্য কুয়াকাটা এখন পর্যটকদের পদভাড়ে মুখরিত হওয়ায় হাসি ফুটেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মুখে। আগত পর্যটকরা সৈকতের বালিয়াড়িতে আনন্দ উন্মাদনায় মেতেছেন। অনেকেই প্রিয়জনের সঙ্গে সমুদ্রের নোনা জলে সাঁতার কাটছেন। কেউবা আবার বেঞ্চিতে বসে সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। পর্যটকদের এমন ভীড়ে বুকিং রয়েছে অধিকাংশ হোটেল মোটেলের কক্ষ। আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।

সাপ্তাহিক ছুটি এবং বিজয় দিবসকে ঘিরে সাগরকন্যা কুয়াকাটায় পর্যটকদের মিলন মেলা বসেছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে কুয়াকাটায় নানা বয়সের হাজারো পর্যটক দর্শনার্থীদের ভীড় জমতে শুরু করে। অসংখ্য পর্যটকদের আগমনে বিজয় দিবসে সৈকতে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে বেড়ানোসহ কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন আগতরা।উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা বাড়ায় কুয়াকাটা সৈকতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে পর্যটক দর্শনার্থী।

খুলনা থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা সায়মা আক্তার বলেন, ডিসেম্বর মাসে স্কুল কলেজের পরিক্ষা শেষে আমরা পরিবারের সবাই মিলে সমুদ্র দর্শনের জন্য কুয়াকাটা এসেছি। আসার পথে আমাদের কোনো অসুবিধা হয়নি, কারন রাস্তাঘাট আগের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে। বরিশাল থেকে আসা পর্যটক আঞ্জমান আরা বলেন, আমাদের বরিশালের প্রানকেন্দ্র কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। আমরা এই সৈকতকে বিভাগের তথা দেশের একটি অন্যতম নৈসর্গিক স্থান সাগরকণ্যা। এর বিশেষ আকর্ষন হলো যেখানে একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায় যা বিরল। তবে বর্ষা মৌসুমে এখানকার মেঘলা আকাশের সাথে সমুদ্রের ঢেউ আমাকে আরো বিমোহিত করে তোলে। তাই এখানে বার বার ছুটে আসি। ঢাকা থেকে আসা মোঃ সুজন বলেন, কুয়াকাটা পর্যটকদের ভ্রমনের জন্য ব্যবস্থাপনা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের ভূমিকা প্রশংনীয়। কুয়াকাটা সৈকতে প্রথমবার এসে অনেক আনন্দ উপভোক করেছি। পরবর্তীতে আবারো আসবো এই সৈকত ভ্রমনে। এখানে প্রতিটা মুহুর্ত আমাকে আনন্দ দিচ্ছে।

কুয়াকাটা আচার-ঝিনুক ব্যবাসী বেল্লাল খলিফা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পর্যটক প্রায় শূন্যের কোঠায়। তবে বর্তমান দেশের পরিস্থীতি কিছুটা স্বাভাবিক থাকায় বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে কুয়াকাটায় মৌসুমের শুরু থেকে এই প্রথম সবচেয়ে বেশি পর্যটকের আগমন ঘটেছে। এতে করে গত দুইদিন আমাদের বেচাবিক্রি ভালো হচ্ছে। পর্যটকদের সমাগম যদি এভাবে অব্যাহত থাকে তাহলে আমাদের দূর্দিন কেটে যাবে অচিরেই। আশা করছি শীগ্রই দেশের পরিস্থিতী স্বাভাবিক হলে কুয়াকাটায় অসংখ্য পর্যটকদের আগমন ঘটবে।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ হাসনাইন পারভেজ বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে আগত অসংখ্য পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়ন সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পর্যটক স্পটে পোশাকধারী নিরাপত্তার পাশাপাশি সাদা পোশাকের নজরদারী বিদ্যমান রয়েছে। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান নিরাপদ ভ্রমনের ক্ষেত্রে সচেতন করা হচ্ছে। এবং কুয়াকাতা শোমূডড়ো সৈকতের আশপাশ সকল আবাসিক হোটেল-মোটেল সহ রেষ্টুরেন্টে যাতে পর্যটকরা কোনো প্রকার হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট রয়েছি।