
রাজশাহীর তানোরে ছেলের সুন্নতে খাতনায় পিতাকে না বলায় মাদকাসক্ত স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী ও ৫ বছর বয়সি নিষ্পাপ শিশু সন্তানকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ঘাতক পিতা আলিউল (৩৫) কে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তি পাঁচন্দর ইউপির মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত সিদ্দিকের পুত্র।
গত শনিবার (২৬ আগষ্ট) বিকেলে তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের পাঁচন্দর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মা-ছেলেকে তালাকপ্রাপ্ত স্বামী কর্তৃক খুনের ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে এলাকার হাজার হাজার মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। ঘটনার পর নানা আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। ঘাতক আলিউলের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছেন স্থানীয় মানুষজন।
জানা গেছে, তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির পাঁচন্দর গ্রামের বাসিন্দা নিপা (২২) এর সাথে মাদকাসক্ত আলিউলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের পরিবারে নূর নামের একটি শিশু পুত্র সন্তান জন্মগ্রহন করেন। তাদের সংসারে বনিবনা না হওয়ায় বছর খানেক আগে তাদের ডিভোর্স হয়। এ নিয়ে রাজশাহীর নারী ও শিশু আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এরপর থেকে তারা আলাদা বসবাস করছেন। নিপা ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকতেন।
গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) নিপা তার সন্তানের সুন্নতে খাতনা দেয়। ছেলের সুন্নতে খাতনার বিষয়টি আলিউলকে না জানানোয় ক্ষিপ্ত হয়ে সে নিপার বাড়িতে গিয়ে চাকু দিয়ে প্রথমে স্ত্রী ও পরে তার সন্তানকে খুন করে। মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে আলিউলকে মারধর করে বেঁধে রেখে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
পরে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় তানোর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলায় আলিউলকে আটক দেখিয়ে রাজশাহীর আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আব্দুর রহিম বলেন, আসামী আলিউল প্রথমে স্ত্রীকে ও পরে সন্তানকে খুন করে। রোববার আসামীকে আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আরও কি কারণে এই খুনের ঘটনা তা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন