কলাপাড়ায় ঈদ খরচের টাকা যোগাতে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০-৩৫টি গাছ কেটে স্বমিলে বিক্রি করে দিলো প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। ধুলাসার ইউনিয়নের ৫৮ নম্বর অনন্তপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে গনমাধ্যমের কাছে উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, এ অবস্থায় পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যাপক হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন তারা। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানা যায়, অনন্তপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বর থেকে গত কয়েকদিন ধরে ২০টি চাম্বল, ৮টি রেইনট্রি ও ৫টি মেহগনি গাছ কেটে স্বমিলে বিক্রি করে দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল আলম ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান খলিফা। গাছ ব্যবসায়ী তাওহীদ শ্যালো ইঞ্জিন চালিত ভ্যান যোগে এ গাছ নিয়ে খোকন খলিফার মালিকানাধীন স্বমিলে জড়ো করেন।
বেশ পুরনো এবং পরিপক্ক গাছ হওয়ায় প্রতি কেভি গাছের মূল্য মূল্য হাঁকা হচ্ছে ১ হাজার টাকা। ক্রয়কৃত অধিকাংশ গাছের বেড় ৬-৭ফুট। কোন ধরনের সভা, রেজুলেশন কিংবা উপজেলা কমিটির নিলাম বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই এসব গাছ কেটে বিক্রি করে সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়ে অন্তত: আড়াই লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় স্কুল সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দাতা সদস্য কে. এম মেহেদী হাসান প্রিন্স খলিফা বলেন, স্কুল ক্যাম্পাস থেকে বড় সাইজের পুরনো সব গাছ কেটে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। গাছ কাটার বিষয়ে স্কুলে কোনো সভা ডাকা হয়নি। বিষয়টি প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি কেবল জানেন। স্থানীয় গাছ ব্যবসায়ী তাওহীদ জানান, ‘মনির খলিফা, খোকন খলিফা ও জিয়া হাওলাদার আমার কাছে গাছ বিক্রি করেছে। নগদ টাকা দিয়ে আমি গাছ কিনেছি। গাছ কাটার আগেই তারা আমার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম নিয়েছে। কাটার পর গাছ স্বমিলে আনতে বাকী সমুদয় টাকা আমাকে দিয়ে দিতে হয়েছে।: বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান খলিফা বলেন, ‘ঈদের খরচ যোগাতে নয়, স্কুলের স্পোর্টস অনুষ্ঠান ব্যয়ের জন্য আমরা এই গাছ কেটে বিক্রি করেছি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল আলম বলেন, ভাই সভাপতির সাথে কথা বলেন, তাহলেই হবে। কলাপাপড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অচ্যুতানন্দ দাস বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি জেনে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। পটুয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বখতিয়ার মোল্লা বলেন, বিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে গাছ কাটতে হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে গাছ কাটতে হয় এবং বিক্রির সমুদয় অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হবে। এর ব্যত্যয় হওয়ার সুযোগ নেই। কলাপাড়া ইউএনও মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি জানিনা। স্কুল সভাপতি, প্রধান শিক্ষকের সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ বিক্রির কোন এখতিয়ার নেই। তারা গাছ বিক্রি করে থাকলে মামলা হবে।