
কলাপাড়ার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান পৌর শহর ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনকে সামনে রেখে সরগরম হয়ে উঠেছে নির্বাচনীয় মাঠ। ১৫ জুলাই শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কলাপাড়া পৌর শহর ব্যবসায়ী সমিতি নির্বাচন। কলাপাড়া পৌর শহর ব্যবসায়ী ব্যবসায়ী সমিতি লিমিটেডের মাধ্যমে হাজারো মানুষ এর সঙ্গে জড়িত।
এ ব্যবসায়ী সমিতি কলাপাড়ার অর্থনীতিতে বিশাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে আলোচনা-সমালোচনা চলছে চায়ের টেবিল ও ব্যবসা প্রতিষ্টানে। কে হতে চলছে ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি। সাবেক সাধারন সম্পাদক ফিরোজ শিকদার হচ্ছেন ? নাকি আসছে নতুন মুখ নাজমুল ইসলাম।
এদিকে কলাপাড়া বানিজ্যিক পৌর এলাকায় ব্যানার-পোস্টার-ফেষ্টুনে ছেয়ে গেছে। এ নির্বাচনকে ঘিরে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি স্থানীয়দের মাঝেও দেখা দিয়েছে খুশির আমেজ। প্রচার-প্রচারণায় মুখর প্রার্থীরা। কথার বুলি আর নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা।
এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে চালানো হচ্ছে প্রচারনা এবং সেই সাথে চলছে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা সংবলিত বিভিন্ন মন্তব্য। ইতোমধ্যে ভোটারেরাও শুরু করেছেন প্রার্থীদের চুলচেরা বিচারÑবিশ্লেষন। যাকে ভোট দিলে ব্যবসায়ী সমিতি উন্নয়ন হবে, এমন ব্যক্তিকেই নির্বাচিত করার পক্ষে বেশির ভাগ ভোটাররা অভিমত প্রকাশ করেছেন। সকল জল্পনা-কল্পনা শেষে নানা চড়াই-উতড়াই পেরিয়ে একটি সুষ্ঠু ও ব্যবসায়ী বান্ধব কমিটি উপহার দিতে পারবেন তাকেই ভোটারা ভোট দিবেন বলে আশা ব্যক্ত করে তারা।
কলাপাড়া পৌর শহর ব্যবসা সমিতির নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা যায়, পৌর শহর ব্যবসায়ী সমিতি একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। ২০১৫ সাল থেকে এ প্রতিষ্ঠানটি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। আগামী ১৫ জুলাই খেপুপাড়া মহিলা কলেজ অফিস কক্ষে সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ব্যবসায়ী সমিতির ভোট গ্রহণ চলবে। মোট ভোটার সংখ্যা ১২৫৭। ১২টি পদের মধ্যে ৮টি পদে নির্বাচন। বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় ৪ টি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। এখন ৮টি পদে ১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। বিনা প্রতিদ্বন্ধি¦তায় ৪ টি পদে নির্বাচিত হয়েছেন সহ-সভাপতি শাহ আলম খাঁন, প্রচার সম্পাদক পদে তৈয়ুবুর রহমান, নির্বাহী সদস্য মোনাশেফ খাঁন, মো. আক্তার হোসেন।
শুক্রবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এ নির্বাচনে সভাপতি পদে ২ জন প্রতিদ্বন্ধি¦তা করবেন। তারা হলেন ফিরোজ শিকদার (ছাতা), নাজমুল ইসলাম (আনারস), সিনিয়র সভাপতি পদে ২জন তারা হলেন জাকির শিকদার (গরুর গাড়ী), বিল্লাল খাঁন কাবুল (এ্যারোপ্যালেন), সাধারন সম্পাদক পদে ২জন তারা হলে সৈয়দ মো. রাসেল (তালাচাবি), আলহাজ্ব শহিদুল ইসলাম (দোয়াত কলম), যুগ্ন-সম্পাদক পদে ২জন তারা হলেন রেহান উদ্দির রেহান (কলস), খাইরুল আমিন (রিকসা), সাংগঠনিক ৩জন তারা হলেন সার্জেন্ট অব. নুরমোহাম্মদ (আম), মাহমুদুল হাসান সুমন (মোরগ), সুমন মল্লিক (ইলিশ মাছ), অর্থ সম্পাদক ২জন তারা হলেন নুর জামাল খালাসি (ঘোড়া), সালাম বিশ্বাস (সিলিংফ্যান), ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ২জন তারা হলেন রহিমুর রহমান হিরু (ফুটবল), ফরিদ উদ্দিন (ত্রিুকেট ব্যাট) এবং দপ্তর সম্পাদক পদে ২জন তারা হলেন বি এম খালেক (আপেল), শওকত হোসেন সবুজ মৃধা (হরিন)।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, সুষ্ট ও নিরপেক্ষ ভোট আমরা ব্যবসায়ীকরা চাই। কিন্তু এক জন ব্যবসায়ীকের পরিচয় তার ট্রেডলাইসেন্স। ট্রেডলাইসেন্স বিহীন কিভাবে ভোটার হয়, কোন আইনে। কিভাবে প্রার্থী হয় তা আমার জানা নেই বলে তিনি প্রতিবেদকে জানান। আশা করি যারা নিবাচিত হবেন তারা ব্যবসায়ীদের সুখ-দু:খে পাশে থাকবেন। তবে অধিকাংশ সদস্যই অভিযোগ করেছেন যারা ব্যবসার সাথে জড়িত নয় তাদেরকেও সদস্য করায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। একটি নির্বাচনে ইশতেহার থাকাটা জরুরী। ইশতেহার ছাড়া একটি সংগঠন কিংবা সদস্যদের উন্নয়নে শুভংকরের ফাঁকি থাকার সম্ভাবনা থাকে। নির্বাচনে ইশতেহার না থাকলে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের কোন স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা থাকে না। নিজেদের ইচ্ছেমত সংগঠন পরিচালনা করার চেষ্টা ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবে। যা পরবর্তীতে সমিতি ও সদস্যদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আমরা ব্যবসায়ীরা চাই নির্বাচনে প্রার্থীরা তাদের ইশতেহার ঘোষণা করুক। এটি আমাদের দাবি।
তবে ভোটাররা বলছেন, সৎ, যোগ্য ও নেতৃত্বের গুণাবলী এবং দুঃসময়ে যাকে কাছে পাবেন তাকেই নির্বাচিত করতে চান।
সভাপতি পদে ছাতা প্রতিকের প্রার্থী মো. ফিরোজ শিকদার জানান, ব্যবসায়ী সমিতির সংগঠনের সকল ব্যবসায়ীদের যানমালের নিরাপক্তা দিবো ও মাদক মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করবো।
সাধারন সম্পাদক প্রার্থী তালাচাবি প্রতিকের সৈয়দ মো. রাসেল বলেন, শালিস বানিজ্য, কোন অন্যায় প্রশ্রয় দেয়া হবেনা। ব্যবসায়ীদের বিগত দিনে যারা বিভিন্ন পদে ছিল তাদের বাকী ও অসমাপ্ত ভালো কাজগুলো সামনে এগিয়ে নেয়া হবে।
কলাপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির সংগঠনের নির্বাচন পরিচালনা রিটানিং ও কমিশন দায়িত্বরত অধ্যক্ষ বশির উদ্দিন জানান, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের হাতে নতুন নেতৃত্ব তুলে দেয়া হবে। আমাকে আস্থা ও বিশ্বাসের ওপর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন