দক্ষিণাঞ্চলে এবার কালু ও চান্দু কোরবানির বাজার কাপাবে। কলাপাড়ায় সিদ্দিক মীর নামের এক কৃষক কোরবানীর বাজার ধরতে এই প্রথমবারের মতো কালু ও চান্দু নামের দুই ভাই বিশালদেহীর দুটি ষাঁড়কে প্রস্তুত রেখেছেন। কালুর ওজন ১ টন এবং চান্দুর ওজন ২২ মন হবে বলে এমন ধারণা দিয়েছেন। যার বাজার মূল্য কালু ১১ লক্ষ টাকা আর চান্দুর ৭ লক্ষ টাকা হাঁকিয়েছেন এ কৃষক পরিবার। লতাচাপলী ইউনিয়নের থঞ্জুপাড়া গ্রামে শাহিওয়াল ও হলিস্টিন জাতের বিশালদেহী ষাঁড় কালু-চান্দুকে দেখতে প্রতিদিন দর্শনার্থী ও ক্রেতারা আসছেন তার বাড়িতে।

শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিদ্দিক মীর পেশায় একজন কৃষক, ৪ বছর আগে থেকে দেশীয় একটি গাভীর সাথে কালুকে ৮০ হাজার টাকা দামে কিনে পালন শুরু করে। পরের বছর কপালে চাদ নিয়ে জন্ম দেন আর একটি ষাড় লালন-পালন করতে করতে বিশাল বড় হতে থাকে এরপর গরুর প্রতি যতœ এবং পশু ডাক্তারদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে খুব যতœ করে গরুর প্রতি। বর্তমানে ঔ গাভীটি আর দুটি বাচ্চা আছে তা পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেখা শুনা করে। এ ষাড় দুটি আলাদা ঘরে রেখে প্রতিদিন তাজা ঘাস ও ভুট্টা গুড়া খাওয়াই মাশাল্লাহ দেখত দেখতে অনেক বড় হইছে আসলে এত বড় হবে তা ভাবতেও পারি নাই।বর্তমানে এসে তার প্রতিদিন খাবার লাগে প্রায় হাজার টাকার। এখন পর্যন্ত তিনি এদের পিছনে খরচ করেছেন প্রায় দশ লাখ টাকা।

স্থানীয়রা জানান, আদর-যতেœ কালু-চান্দুর স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য খেয়াল রাখছেন সিদ্দিকের পরিবারের সবাই। সারাক্ষণ মাথার উপরে ফ্যান চালানো, দৈনিক ২-৩ বার গোসল করানো সব মিলিয়ে তাদের সেবা-যতেœ ত্রুটি রাখে না তাঁরা।

প্রতিদিন ষাড় দুটি নিয়ে কষ্ট করা ছিদ্দিক মীরের বড় ছেলে বলেন, প্রথমে আমরা একদম ভাবিনি যে এ বাচ্চা দুটি এত বড়ো হবে। বাবায় দেখাশোনা করতো, আমরা কোন দেখাশোনা করতাম না, যখন দেখি উত্তর অঞ্চলের গরুর খামারে যে সব বড় বড় গরু দেখি অথচ ওইসব গরুর মতো আমাদের বাড়ীতেও তা আছে, তখন থেকে এর প্রতি অনেক বেশী গুর্ত্বু দেই, গত এক বছর যাবৎ এ গরু দেখাশোনার জন্য বেড়াতেও যেতে পারি না, এ গরু লালন-পালনে ও সামাল দিতে তিন থেকে চার জন লোক লাগে। এখন ভালো ভাবে বেচা-কেনা করতে পারলেই হয়।

কৃষক সিদ্দিক মীর জানায়, ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছি কালুকে বিক্রি করে তার সাথে একটি খাসি ফ্রি দিবো। তবে চান্দুর সাথে কিছু ফ্রি নেই। আমি সখের বসে পালন শুরু করে আজ আমি সফলতা পেয়েছি তবে এখন কাঙ্খিত দামে বিক্রি করতে পারলে আমি স্বার্থক।

প্রতিবেশী দবিরুল ইসলাম সোহান বলেন, অত্র এলাকায় এরকম ষাঁড় আর আগে কখনো দেখা যায়নি। গত কয়েকবছরেও এই এলাকায় যা তৈরি হয়নি, তাই বেশ ভালো লাগছে, অনেক লোক এগুলোকে দেখতে এসেছে। আমরা প্রতিবছর বাজারে এত বড় ষাঁড় আসলে দেখতে যেতাম কিন্তু এখন নিজের এলাকায় দেখছি।

কলাপাড়া উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গাজী শাহ আলম জানান, কৃষক সিদ্দিকের এই ষাঁড় দুটি কলাপাড়ার মধ্যে অন্যতম তার পরিশ্রমকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তাঁকে অনুসরণ করে যারা পশু পালনে আগ্রহী হচ্ছে তাদেরকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। এবার কলাপাড়ায় সর্বমোট কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার ৯৮২ টি পশু।