
পুলিশের ৮৪ জন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করতে একটি তালিকা চূড়ান্ত করেছে সরকার। জানা গেছে চলমান অভিযানের সময় অন্তত ১৫ জন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করার সম্ভাবনা আছে। বাকিদের ছয় মাসের মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে। এরই মধ্যে ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে দুজন ডিআইজি ও তিনজন পুলিশ সুপারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা গেছে গ্রেপ্তারের তালিকায় সাবেক আইজিপি, অতিরিক্ত আইজিপি, ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপার ও ইন্সপেক্টর রয়েছেন। পাশাপাশি পলাতক কর্তাদের ধরতে নোটিশ যাচ্ছে পুলিশের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলে।
সরকারের কাছে তথ্য রয়েছে, পলাতক ও অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন আছেন আত্মগোপনে, কেউ আছেন দেশের বাইরে আবার কেউ দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে।
সিদ্ধান্ত হয়েছে, আন্দোলনের সময় যারা সরাসরি অংশ নিয়েছেন এবং দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আবার সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ অনলাইনে সরকারের বিরুদ্ধে পুলিশকে উসকানি দিয়েছেন।
এদিকে জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় ঢাকাসহ সারা দেশে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, এমপি, নেতাকর্মী ও আমলাদের বিরুদ্ধে মামলার পাশাপাশি, মামলা হয়েছে পুলিশের সাবেক আইজিপি থেকে শুরু করে কনস্টেবলদের বিরুদ্ধেও।
এরই মধ্যে সাবেক আইজিপিসহ ৩৩ জন পুলিশকর্তাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার ও নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের কেউ কেউ দেশের বাইরে আছেন। কেউ আছেন আত্মগোপনে অথবা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে। ২০২ জনের মতো পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন।
যারা কর্মস্থলে উপস্থিত হননি তাদের তালিকা করা হয়েছে। বেশ কিছু কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের নির্দিষ্ট সময় পর বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বেশ কিছু কর্মকর্তা দেশের বাইরে চলে গেছেন। এখন পর্যন্ত সাবেক দুই আইজিপিসহ ৩৩ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গেপ্তার হওয়া ওই কর্মকর্তারা আন্দোলন প্রতিরোধে কী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল তার বিবরণ দিয়েছেন। আবার শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বৈঠকে কী বিষয়ে আলোচনা করেছেন সে তথ্যও দিয়েছেন আটক পুলিশ কর্মকর্তারা।
জানা গেছে ইতোমধ্যেই আটক হওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘জঙ্গি নাটক’, শক্তি প্রয়োগ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড, খুন-গুমসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তারা পুলিশের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলোতে বসে পুলিশকে রাজনৈতিক দমনপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। পিআরবিসহ প্রচলিত যাবতীয় বিধি লঙ্ঘন করে তারা বিশেষ দলের হয়ে কাজ করেছেন। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন অনেকে।
মন্তব্য করুন