
কলাপাড়ায় ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া সেবা না পাওয়ার অভিযোগে আলোচিত সেই এসি ল্যান্ড মো. আবুবক্কর সিদ্দিকীর প্রত্যাহার আদেশ কার্যকর হওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
নতুন এসিল্যান্ড হিসেবে কৌশিক আহমেদের পদায়নে ভূমি অফিসের সেবা প্রত্যাশীদের মধ্যে আনন্দের সঞ্চার হয়েছে। এর আগে জাহাঙ্গীর শেখ নামে এক ভুক্তভোগী জন প্রশাসন মন্ত্রনালয়ে ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া সেবা না পাওয়ার লিখিত অভিযোগে বলা হয় আলীপুর মৌজায় তার ১.২২ একর ভোগদখলীয় জমি ই-নামজারীর জন্য আবেদন করেন ঢাকার উত্তরা এলাকার আবদুস সত্তার, ই-নামজারী কেস নং-৮৮৩/২০২১। যে জমির ই-নামজারীর বিরুদ্ধে পটুয়াখালী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের দে. মো. ৫৭৯/১৪ মামলার রায়, ডিক্রীর কপি, যুগ্ম-জেলা জজ আদালতের দে. মো. ৩৭২/১৭, কলাপাড়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের দে. মো. ৮৪/২০০৬, পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের সি. আর ৮৩৪/২০১৮ মামলার কপি সংযুক্ত করে লিখিত আপত্তি দাখিল করে শুনানীর পরও উক্ত ই-নামজারী কেসটি মঞ্জুর করেন এসিল্যান্ড। এতে সংক্ষুব্ধ জাহাঙ্গীর শেখ আপীলের প্রস্তুতি সহ বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব, ভূমি মন্ত্রনালয়ের সচিবসহ উর্ধ্বতনদের কাছে এসি ল্যান্ড, সার্ভেয়ার ও নাজির উবাসোর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। এছাড়াও কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের পূর্ব পার্শ্বে কুয়াকাটা মৌজার বিএস ১ নং খাস খতিয়ানের ৩৪১২ দাগের প্রায় ০.০৫ একর জমিতে এসি ল্যান্ড মো. আবুবক্কর সিদ্দিকী (পরিচিতি নম্বর-১৮২০২)কে ম্যানেজ করে ৫ তলা আবাসিক হোটেল ভবন নির্মান করেছেন মো. শহিদুল ইসলাম।
উক্ত ভবনটির বেইজে কাজ করার সময় এসি ল্যান্ড আবুবক্কর সিদ্দিকী উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার, মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার ও এমএলএসএস নিয়ে নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন। পরে মহিপুর ভূমি অফিসের তহশিলদার মংলাতেন ভবন মালিকের সাথে মধ্যস্থতা করে মোটা অংকের ঘুষ এনে দেন এসিল্যান্ডকে। যা গনমাধ্যমে প্রকাশ হয়। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের শৃঙ্খলা-২ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আমিনুর রহমান পটুয়াখালী জেলা প্রশাসককে অভিযুক্ত এসিল্যান্ড আবুবক্কর সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন। এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের মাঠ প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী সচিব মর্তুজা আল-মুঈদের ৫ জানুয়ারী ২০২৩ তারিখে স্বাক্ষরিত এক আদেশে কলাপাড়া এসিল্যান্ড মো. আবুবক্কর সিদ্দিকীকে (পরিচিতি নম্বর-১৮২০২) প্রত্যাহার করে বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ে ন্যস্ত করা হয়। এরপর বেশ কিছু দিন অতিবাহিত হওয়ার পর নতুন এসিল্যান্ডের যোগদান ও বিতর্কিত এসিল্যান্ড আবুবক্কর সিদ্দিকীর প্রত্যাহার আদেশ কার্যকর হয়। কলাপাড়া পৌরশহরের মাসুম বিল্লাহ বলেন, সাবেক এসি ল্যান্ড আবুবক্কর সিদ্দিকী আমার দু’টি ই-নামজারী আবেদন সহ একদিনে প্রায় ৭০০ ই-নামজারী আবেদন যুক্তিসঙ্গত কোন কারন ছাড়াই না মঞ্জুর করেন। তাই তার প্রত্যাহারে ভূমি সেবা প্রত্যাশী মানুষ এক ঘোর-অন্ধকার থেকে মুক্তি পেলো।
মন্তব্য করুন