
বাংলাদেশে পাঠ্যবইয়ের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দসহ গ্রাফিতি সরানোর ঘটনায় বিক্ষোভ এবং সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। নৃগোষ্ঠীভুক্ত শিক্ষার্থী ও ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ সংগঠনের মধ্যে মতিঝিলে এনসিটিবি কার্যালয়ের সামনে বুধবার এবং বৃহস্পতিবার এই উত্তেজনা দেখা দেয়।
বুধবার নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলাকালে সংঘর্ষের অভিযোগ ওঠে। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার আরেক দল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের লাঠিচার্জ করে। এতে তিন থেকে চারজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বুধবারের হামলার অভিযোগ ও গ্রেপ্তার
বুধবারের হামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে একজন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য বলে জানা গেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। এদিকে সরকার জানিয়েছে, হামলায় জড়িত সন্দেহে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ঘটনার বিচার নিশ্চিত করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’র অবস্থান
‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ জানায়, বুধবারের বিক্ষোভ তাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। তারা পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দ মুছে ফেলার পাশাপাশি রাখাল রাহা নামের এক কমিটির সদস্যকে অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছিল। সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ ইয়াকুব মজুমদার জানান, এনসিটিবি তাদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। এর অংশ হিসেবে পাঠ্যবই থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দ অপসারণ করা হয়, তবে অন্য দাবিগুলো পূরণ হয়নি।
এনসিটিবির সঙ্গে বৈঠক ও সময়ক্ষেপণের অভিযোগ
বুধবার সমাবেশ চলাকালে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ আলোচনার জন্য সংগঠনের নেতাদের ডেকে নিয়ে যায়। তবে সেখানে তাদের সময়ক্ষেপণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন মুহাম্মদ ইয়াকুব। তিনি জানান, আলোচনার সময় পুলিশকে ১৫ মিনিটের জন্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার অনুরোধ করা হয়েছিল, কিন্তু নৃগোষ্ঠীর বিক্ষোভকারীরা এসে পরিস্থিতি জটিল করে তোলে।
সংগঠনের দাবি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ নিজেদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে দাবি করে। তারা দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় কাজ করার কথা জানায়। সংগঠনটি আরও জানিয়েছে, তাদের কমিটি এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি এবং শিগগিরই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা করা হবে।
বুধবারের ঘটনাগুলোকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এনসিটিবি এবং সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছে।
মন্তব্য করুন