
কলাপাড়ার মহিপুরে ৪ টন সরকারী পাঠ্যবইসহ একটি ট্রাক আটক করেছে উপজেলা প্রশাসন। রবিবার রাত সাড়ে বারোটার দিকে মোয়াজ্জেমপুর সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা সংলগ্ন সড়ক থেকে এসব বই জব্দ করে কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কৌশিক আহমেদ। আটককৃত বইয়ের বাজারমূল্য প্রায় ৫ লাখ টাকা।
সোমবার সরেজমিনে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোয়াজ্জেমপুর সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আবু বক্কর সিদ্দিক রাতের আধারে এসব পাঠ্যবই ঝিনাইদহ এলাকায় নিয়ে বিক্রি করতে চেয়েছিলো। পরে ট্রাকে করে বইগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বইগুলো আটক করে উপজেলা প্রশাসন।
স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, রবিবার রাতে মাদ্রাসার সামনে একটি ট্রাক ও কয়েকজন লোককে দেখতে পাই। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে স্থানীয় কয়েকজনকে খবর দিলে তারা বিষয়টি টের পেয়ে দ্রুত স্কুল মাঠ ত্যাগ করেন পরবর্তীতে এক কিলো দূরে গিয়ে ট্রাকসহ তাদের আটক করি। সেখানে কেন এসেছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, এই স্কুল থেকে কিছু বই কিনেছি। দেখতে চাইলে তারা উপস্থিত লোকজনের সামনে বইগুলো দেখান।
মোয়াজ্জেমপুর গ্রামের আরেক বাসিন্দা জালাল উদ্দিন জানান, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদেরকে বিনামূল্যে বই দিয়েছেন। অথচ প্রধানশিক্ষক চাহিদার অতিরিক্ত বই এনেছেন। তাই অতিরিক্ত বই তিনি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এ অসৎ প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।
সরকারি বই বিক্রির বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষক আবুবকর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি একা নই স্কুলের অন্য শিক্ষকদের সাথে রেজুলেশন করে বইগুলো বিক্রি করছি। সরকারি বই বিক্রি করা বৈধ কিনা এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এবিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা জানায়, বিক্রি করা বইগুলো জব্দ করেছি। প্রধানশিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ৫দিনের মধ্যে প্রধানশিক্ষককে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ট্রাকসহ বইগুলো আটক করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক (শিক্ষা আইসিটি) মরিয়ম বেগম বলেন, তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বই বিক্রির ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
মন্তব্য করুন