
কুয়াকাটায় নারী ও মাদক ব্যবসার সাথে জরিত থাকার অভিযোগে ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের ইনস্পেক্টর হুমায়ুনকে একটি নির্মাণাধীন ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয় জনতা। এসময় ওই ভবনে ভাংচুর চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা।
পরে পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার , ট্যুরিস্ট পুলিশ পরিদর্শক হাচনাইন পারভেজ ও ডাবলু এবং থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। অভিযুক্ত ওই ইনস্পেক্টরকে উদ্ধার করে মহিপুর থানা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।
বুধবার রাতে কুয়াকাটা পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের পাঞ্জুপাড়া গ্রামে গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে স্থানীয় যুবক কাইয়ূম সিকদার (৩০) এর সাথে মাদক ও নারী ব্যবসা নিয়ে তর্কাতর্কি হয়। এসময় কাইয়ুম সিকদারকে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয় এমন অভিযোগে স্থানীয় মানুষজন জড়ো হয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর হুমায়ুনকে অবরুদ্ধ করে রাখাসহ ওই ভবনে ভাংচুর চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা।
এসময় তারা অভিযোগ করেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের ওই কর্মকর্তার যোগসাজশে নারী ও মাদকের আড্ডা চলে এখানে। রুমের ভিতরে নারীসহ পুলিশ পরিদর্শক হুমায়ুন অবস্থান করছে। তবে এমন অভিযোগের সত্যতা না পেলেও সেখান থেকে একটি ব্যাগে নারীদের পরিহিত বেশ কয়েকটি বোরখা, ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করে মহিপুর থানা পুলিশ।
অভিযুক্ত ট্যুরিস্ট পুলিশের ওই কর্মকর্তা এবং ভবনের কেয়ার টেকার সবুজের দাবী তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পুর্ন মিথ্যা। কাইয়ূম সিকদার একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এবং সেবনকারী। মদ খেয়ে এসে হোটেলে ভাংচুর চালায়।
এ বিষয়ে কাইয়ুম শিকদার বলেন, আমি বাসায় যাওয়ার পথে পুলিশের মটর সাইকেল দেখে দাড়াই। পথিমধ্যে সুমন নামের ঐ যুবক ও পুলিশ সদস্যের কাছে কি করছে জানতে চাওয়া হলে আমার সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পরলে স্থানীয়রা এনিয়ে প্রতিবাদ করেন। কিন্তু এই বক্তব্যের সাথে প্রতিবেদকের পাওয়া ঘটনার সূত্রপাতের একটি ভিডিও ক্লিপসের সাথে কোনো মিল নেই। ভিডিওতে দেখা যায় শুরুতেই অভিযোগকারী নিজেই নানা অসংলগ্ন আচরন করছে। এবং তাকে পুলিশ সদস্য কর্তৃক ছুরি দিয়ে কোপ মারার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের ইনচার্জ হাসনাইন পারভেজ বলেন, কাইয়ুম শিকদার একজন মাদকাসাক্ত। তার বিরুদ্ধে ধর্ষন সহ একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি মদ্যপান করে এলাকার মধ্যে একটি আস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে তুলেছে। তারা যে অভিযোগ করছেন তার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এনিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা আমাদের দায়ীত্ব পালনকালে অসংলগ্ন আচরন পর্যন্ত করেছে যা সুস্থ কোনো মানুষের ক্ষেত্রে কখনোই কাম্য নয়।
কুয়াকাটা সৈকতে প্রায় ৪০ জন ভাসমান পতিতা রয়েছে যারা এলাকার বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কক্ষ ভাড়া নিয়ে পতিতাবৃতি পরিচালনা করে আসছে। আর বাসার মালিকরা পতিতাদের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েও তাদের কাছে বাসা ভাড়া দিচ্ছে। এঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন মহিপুর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে স্থানীয়রা। স্থানীয় একাধিক সূত্র অভিযোগ করে বলছেন, কুয়াকাটা পৌরসভা সহ মহিপুর থানা এলাকার বিভিন্ন ভাড়া বাসায় অবস্থান নিয়ে দীর্ঘদিন পতিতা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে স্থানীয় চক্রের যোগসাজসে পুলিশের কতিপয় সদস্যরা।
এ ছাড়াও অনেক বাসা বাড়িতে ভাড়া থেকে সৈকতে ভাসমান পতিতা বানিজ্য করে আসছে তারা। এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সহ পর্যটকরা নানা সময়ে চরম আপত্তি জানিয়ে আসলেও এর কোনো প্রতিকার মেলেনি। অন্যদিকে পতিতাদের উৎপাত প্রকট রূপ ধারন করায় স্থানীয়রা এসব নির্মূল করনে উদ্যোগ নিলেও কাজে আসেনি। কুয়াকাটার পাঞ্জুপাড়া গ্রামে পূর্বে এই পতিতা চক্র বাসা ভাড়া নিয়ে অনৈতিক কার্যকলাপ চালালে স্থানীয় পৌর মেয়র সতর্ক করেছেন বলে জানান যায়।
মন্তব্য করুন