পটুয়াখালী জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী জয়তারা ও শীতলা মন্দিরে মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে দুইবার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে পুরোহিত রাজু ঘোষাল ও স্থানীয়রা মন্দিরে গিয়ে দেখতে পান, মন্দিরের ভেতরের সবকিছু লণ্ডভণ্ড অবস্থায় পড়ে আছে। পূজার সামগ্রী থেকে শুরু করে বিগ্রহ ও অলংকার পর্যন্ত বহু মূল্যবান সামগ্রী চুরি হয়ে গেছে।

মন্দির কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, চুরি হওয়া সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে কাসা-পিতলের বিভিন্ন পূজার সামগ্রী, প্রদীপ, পঞ্চ প্রদীপ, গাছ প্রদীপ, পিতলের বিগ্রহ, গোপাল, রাধা-গোবিন্দ, কালী মাতার বিগ্রহ, তিনটি সিংহাসন, বড় ঘণ্টা, হাত ঘণ্টা, থালা, গামলা, কলশ, গ্লাস, বাটি, অলংকারসহ,ক্যাশ বক্সের ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। সর্বমোট আনুমানিক ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মন্দির কমিটি জানান।

এর আগে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক ১২টার দিকে পুরোহিত রাজু ঘোষাল মন্দিরে পূজা-অর্চনা শেষে তালা দিয়ে বাসায় যান। কিন্তু ভোর ৭টায় ফিরে এসে দেখতে পান, মন্দিরের স্টোর রুমের গেট ভাঙা এবং মালামাল এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে। সেখান থেকেও বেশ কিছু মূল্যবান কাসার ও পিতলের সামগ্রী চুরি হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ পটুয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও জয় তাঁরা মন্দির ও শীতল খোলা মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সঞ্জয় কুমার খাসকেল বলেন, “ধর্মীয় উপাসনালয়ে চুরির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, যা বিগত ২৫ বছরে ঘটেনি। আমরা চাই, প্রশাসন দ্রুত চোরদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসুক এবং মন্দিরের নিরাপত্তা জোরদার করুক।”

এ বিষয়ে পটুয়াখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এসআই খাইরুলকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দ্রুত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সম্প্রতি এলাকায় ছোটখাট চুরির ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে মন্দিরের মতো ধর্মীয় স্থানে চুরির ঘটনা বিরল। তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, মন্দিরসহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বাড়ানো হবে এবং স্থানীয়দের আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানান।