কলাপাড়ায় সড়ক সংস্কারে ৩০টি তাল গাছ কাটার ঘটনায় মহিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: ফজলু গাজী ও ইউপি সদস্য মো: সোবাহান হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই আদেশে এ ঘটনার ব্যাখ্যা জানাতে এলজিইডি কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলীকে ৩০ মে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিচারপতি আবু তাহের মো: সাইফুর রহমান ও বিচারপতি একেএম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। তালগাছ কাটার ঘটনায় ইউএনও ও কৃষি কর্মকর্তার প্রতিবেদন দাখিলের পর শুনানী শেষে এ আদেশ দেন আদালত। আদালত এ আদেশে আরো বলেন, এ সংক্রান্ত রুল নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বরকে সাময়িক বরখাস্ত রাখতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হলো। এ আদেশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে নির্দেশ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে । এর আগে বিভিন্ন গনমাধ্যমে সড়ক সংস্কারে ৩০ তালগাছ উজাড় শীর্ষক সংবাদ প্রকাশের পর ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন ও এলজিইডির পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন সহ অভিযুক্ত মহিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যকে ১৮ মে স্বশরীরে তলব করেন হাইকোর্ট এবং ইউএনও ও কৃষি কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেন আদালত। গনমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে গত ৭মে বিচারপতি আবু তাহের মো: সাইফুর রহমান ও বিচারপতি একেএম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রনোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। এলজিইডির কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল বারী পূর্ন জানান, জলবায়ু সহিষ্ণু গ্রামীন অবকাঠামো (ঈজজওচ) প্রকল্পের আওতায় মহিপুর ইউনিয়নের নজিবপুর গ্রামে ৯ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৬ ফিট প্রশস্ত মাটির কাজের ঠিকাদার চুক্তিবদ্ধ হয় স্থানীয় নারী শ্রমিক সভাপতি রোজিনা ও সেক্রেটারী মোসা: নুরুন্নাহার বেগম। ঈদের ছুটিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছুটিতে থাকার সুযোগে অফিসকে অবগত না করে তারা ভেকু দিয়ে কাজ শুরু করায় ৩০ এপ্রিল তাদের ভেকু প্রত্যাহার প্রসঙ্গে চিঠি দেয়া হয়েছে। এরপর তালগাছ কাটার ঘটনা জানার পর ২মে উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল হোসেনের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়াই সড়কের পার্শ্ববর্তী তাল গাছ কেটে ফেলা ও কোদালের পরিবর্তে ভেকু দিয়ে কাজ করার ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিচালক মহোদয়কে ঠিকাদার চুক্তি বাতিলের জন্য সুপারিশ পত্র পাঠানো হয়। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে আমি ও কৃষি কর্মকর্তা আদালতে এ ঘটনার প্রতিবেদন দাখিল করি। আদালত প্রতিবেদনের উপর শুনানী নিয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বরকে রুল নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিয়েছেন। আদালতের এ আদেশের কপি হাতে পেয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।