
কলাপাড়া-কুয়াকাটা বিকল্প সড়কের বালিয়াতলীর ফেরি পারাপার নয় বছর ধরে বন্ধ আছে। ফেরিটি এখন পন্টুনের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। তবে পানিতে ডুবে আছে। এটি এখন কাদামাটির ভিতরে ঢুকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ফেরিটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় অনেক যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে। দেখে মনে হয় কোন কর্তৃপক্ষ নেই।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের এই ফেরিগুলো এভাবে বছরের পর বছর পরে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাটি-কাদায় নিচে আটকে জং ধরে ভাঙ্গারি মালামাল হিসেবে একসময় বিক্রি করা হয় পানির ধরে এবং সেই সাথে চুরি হচ্ছে সকল মূল্যবান যন্ত্রাংশ।
এছাড়াও ফেরি ঘাটের পল্টুন, গ্যাংওয়ে পর্যন্ত গায়েব হয়ে যাচ্ছে। তথ্য সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রিত এ ফেরিটি ২০০৮ সালে চালু করলেও ২০১২ সালের দিকে বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ২০২১ সালের মার্চ মাসে শেষ হচ্ছে মূল সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ। বর্তমানে এখান থেকে কুয়াকাটাগামী বিকল্প সড়কে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু চালু হওয়ায় ফেরির আর প্রয়োজনীয়তা নেই। সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় উপজেলার বালিয়াতলী, লালুয়া, মিঠাগঞ্জ, ধুলাসার, ডাবলুগঞ্জ এ পাঁচটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে এবং উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজ হলে এখন আর গ্রাম ও শহরের মধ্যে পার্থক্য অনেকটাই কমে গেছে।
বুধবার সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলজিইডির পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প-২৫ এর আওতায় দেশীয় কারিগরি সহযোগিতায় তৈরি মেকানাইজড ফেরিটি বালিয়াতলী পয়েন্টে আন্ধারমানিক নদীর শেষ প্রান্তে স্থাপন করা হয়। উপজেলা পরিষদের কাছে হস্থান্তর করা হয় এ ফেরি।
উপজেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রিত এ ফেরিটি ২০০৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর চালু করলেও ২০১২ সালের দিকে বন্ধ হয়ে গেছে। এর ব্যবস্থাপনা তাদের হাতে ন্যস্ত করা হয়। উপজেলা পরিষদ বাংলা ১৪১৬ সালের জন্য ২৬ হাজার টাকায় ইজারা প্রদান করে। ফেরিটি চালু হওয়ার পরে পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দে বিকল্প এ সড়কে গাড়ি নিয়ে কুয়াকাটা ছাড়াও গঙ্গামতি কাউয়ারচরসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্পট দেখার সুযোগ পায়।
উল্লেখ্য, এ পথে চলাচলকারী বালিয়াতলী, ধুলাসার, লালুয়া, মিঠাগঞ্জ, ডাবলুগঞ্জ ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর হয়। লাঘব হয় দুর্ভোগ। কিন্ত কিছুদিন যেতেই ফেরিটির ইঞ্জিন, গ্যাংওয়ে, পন্টুন বিকল হতে থাকে। ইঞ্জিনের একটি পাখা ভেঙে গেলে তিন বছর পারাপার বন্ধ থাকে। এরপর কয়েক দিনের জন্য চালু হয়ে ফের বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তিতে আর পুর্নাঙ্গভাবে চালু হয়নি। এখন দীর্ঘ কয়েক বছর ফেরিটি চরে কাদার উপরে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় বালীয়াতলীর বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ফেরিটি মাটি কাদায় নিচে আটকে জং ধরেছে। পানিতে ডুবে আছে। কাদামাটি ভিতরে ঢুকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ফেরিটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় অনেক যন্ত্রাংশ পর্যন্ত চুরি হয়ে গেছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম আতিকুল্লাহ বলেন, সরেজমিনে গিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম রাকিবুল আহসান জানায়, ফেরিটির মধ্যে পানি ঢুকে ও কাঁদায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কয়েকবার এ বিষয় উপজেলা পরিষদে মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে।
মন্তব্য করুন