বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) কাউনিয়া হাউজিং প্রকল্প-২ এর প্লট বরাদ্দের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয়রা।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বরিশাল নগরের কাউনিয়া হাউজিং প্রকল্পের পাশে আয়োজিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেয় স্থানীয় ১ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জনসাধারণ।

এ সময় বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) অসাধু কর্মকর্তাসহ তাদের অনুসারীদের নামে-বেনামে কাউনিয়া হাউজিং প্রকল্প-২ এর প্লট বরাদ্দের অভিযোগ তোলা হয়। তাই বর্তমান প্লট বরাদ্দ কার্যক্রম বন্ধ করে লটারির মাধ্যমে তা বরাদ্দের দাবি জানান স্থানীয়রা।

পাশাপাশি অবিলম্বে হাউজিং প্রকল্পের মাস্টারপ্ল্যান-নকশা প্রকাশ, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ, সড়ক নির্মাণের দাবি জানানো হয়। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তৃতা করেন ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমির হোসেন বিশ্বাস, স্থানীয় বাসিন্দা শাজহাজান শিরাজ, গাজী মকবুল হোসেন, আউয়াল মোল্লা, বাবুল হোসেন ও আবদুল আজিজ হাওলাদার প্রমুখ।

 

বক্তারা বলেন, এই হাউজিং প্রকল্পের জমি বিনাপয়সায় অধিগ্রহণের কারণে ভূমি মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এরপর ২৪০টি প্লট বরাদ্দের জন্য সিটি করপোরেশন ২০২১ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর জেলার হাজার হাজার মানুষ তিন হাজার টাকা করে দিয়ে আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছে। সেই প্লটের কোনো মাস্টারপ্ল্যান বা নকশাও করা হয়নি।

এছাড়া অধিগ্রহণ করা জমির মালিকদের প্লট বরাদ্দের অগ্রাধিকার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। প্রকল্পের সড়ক, ড্রেনেজ ব্যবস্থাও করা হয়নি। এর মাধ্যমে শুধু কাগজে-কলমে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীদের না জানিয়ে লটারি ছাড়া প্লট বরাদ্দ দিয়ে জনসাধারণের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

সিটি করপোরেশনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা নিজেদের নামে একাধিক প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারীদের অনিয়মতান্ত্রিকভাবে প্লট বরাদ্দ দিয়েছে বিসিসির অসাধু কর্মকর্তারা।

বিক্ষুব্ধরা বলেন, মেয়র বলেছিলেন, যাদের জমি আছে তাদের এই জমি বরাদ্দ দেওয়া হবে না। এসব নিয়ম উপেক্ষা করে যাদের জমি আছে তাদের নামে প্লট বরাদ্দ দিয়েছে এবং এখন কোনো নিয়ম না মেনে তড়িঘড়ি করে প্ল্যান বহির্ভূতভাবে বরাদ্দ দেওয়া জমিতে স্থাপনা ওঠাচ্ছে।

কোনো ড্রেনেজ বা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করায় বর্ষায় পানি জমে এখন বাসিন্দাদের পানিবন্দি অবস্থায় থাকতে হচ্ছে। এছাড়াও জমি ভাড়াটের নামে মালিকানা জমিও দখলে নিচ্ছে। এনিয়ে উচ্চ আদালতে রিট থাকলেও তা মেয়র উপেক্ষা করছেন।

দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে বরাদ্দ করা প্লট বাতিল করে তা লটারির মাধ্যমে নিশ্চিত করে প্রকৃত স্থানীয় ভূমি মালিকদের বুঝিয়ে দেওয়াসহ ৯ দফা দাবি তুলে ধরেছেন ভুক্তোভোগী ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। তবে প্লট বরাদ্দে কোনো অনিয়ম হয়নি বলে জানিয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা সানজিদ হোসেন।