
গাজীপুরের শ্রীপুরে ইয়াবা সেবন করে এক নারীকে হত্যার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা জানিয়েছেন, ইয়াবা সেবনের পর নারীর সাথে শারিরিক সম্পর্ক করে। পরে শারিরিক সম্পর্কের লেনদেন নিয়ে কথা কাটাকাটি হলেই শ্বাসরোধে হত্যার করে হাত, পা ও কোমড়ে ইট বেঁধে মরদেহ পানিতে ডুবিয়ে দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, গত বছরের ২৫ জুলাই গাজীপুরের শ্রীপুরের টেপিরবাড়ি গ্রামের সুমন মিয়ার ডোবা থেকে হাত, পা বাঁধা ও কোমরে তিনটি ইট বাঁধা ৩০ বছর বয়সী এক নারীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে শ্রীপুর থানার উপ—পরিদর্শক (এসআই) সজীব হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ দুই মাস মামলাটি তদন্ত করে কোন তথ্য উৎঘাটিত না হওয়ায় গাজীপুর পিবিআই’য়ের উপর মামলাটি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া হলে দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্ধি দিয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার টেপিরবাড়ি গ্রামের মো. আবুল হোসেনের ছেলে মো. মোখলেসুর রহমান (৩১), একই গ্রামের ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে মো. খোকন মিয়া (২৭) ও মোঃ মাসুদ রানার ছেলে মো. রাজীব মোড়ল (২৬)। তাদের মধ্যে মোখলেসুর ও খোকন মিয়াকে মঙ্গলবার ভোরে ও রাজীব মোড়লকে পরদিন বুধবার রাতে টেপিরবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। লাশটি সম্পূর্ণ পঁচনযুক্ত হওয়ায় আঙ্গুলের ছাপ নেয়া সম্ভব হয়নি, তাই অজ্ঞাত ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআই’য়ের উপ—পরিদর্শক মো. জহিরুল ইসলাম জানান, গত বছর ঘটনার ৩/৪দিন আগে তারা তিন বন্ধু মিলে চায়ের দোকানে বসে ইয়াবা সেবনের পাশপাশি এক নারীকে এনে শারিরিক সম্পর্ক করে ফূর্তি করতে বলে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই দিন রাত ১০টার দিকে টেপিরবাড়ি গ্রামের সুমনের বাড়ির পাশে নির্জন জায়গাতে যায় এবং ইয়াবা সেবন করে। সেখানে তারা প্রায়ই ইয়াবা সেবনের আড্ডা বসাতো। ইয়াবা সেবনের পর মেয়েটির সাথে তারা শারিরিক সম্পর্কর্ করে।
পরে শারিরিক সম্পর্কের লেনদেন নিয়ে মেয়েটির সাথে মোখলেস, খোকন ও রাজিবের কথা কাটাকাটি হলে এক পর্যায়ে তারা মেয়েটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের সুমনের মালিকানাধীন একটি পানি ভর্তি ডোবায় মধ্যে হাত পাঁ ও কোমড়ে ইট বেঁধে মরদেহটি ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন যে, এটি একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। আসামিদেরকে গ্রেফতার করলে মামলার প্রকৃত রহস্য উৎঘাটন হয় এবং উক্ত আসামীরা ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধি প্রদান করে।
মন্তব্য করুন