আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় কুমিল্লার টাউন হল মাঠে বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিএনপির দুই পক্ষকে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। তবে টাউন হল মাঠের অদূরে কান্দিরপাড় এলাকায় দুটি গ্রুপ বিকল্প স্থানে তাদের কর্মসূচি পালন করবে বলে জানা গেছে। সংঘাতের আশঙ্কায় সকাল থেকে টাউন হল মাঠে বিপুলসংখ্যক পুলিশ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং নগরজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর-৬ (আদর্শ সদর, সিটি কর্পোরেশন, সেনানিবাস এলাকা, সদর দক্ষিণ) আসনে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি মো. মনিরুল হক চৌধুরীকে মনোনয়ন দেয়ার পর থেকে তার মনোনয়ন বঞ্চিত চেয়ারপার্সনের আরেক উপদেষ্টা আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিনের অনুসারীরা বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে একই দিনে একই মাঠে দুই পক্ষের অনুষ্ঠান আয়োজনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এর আগে মনিরুল হক চৌধুরী বৃহস্পতিবার টাউন হল মাঠে জনসভা আয়োজনের ঘোষণা দেন। একই দিন ইয়াছিন অনুসারীরা চেয়ারম্যান খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন। উভয় পক্ষই বুধবার থেকে মঞ্চ ও প্যান্ডেল প্রস্তুত করতে শুরু করেন। এ নিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বুধবার রাতে স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করেন, একই দিনে একই মাঠে দুই পক্ষের কর্মসূচি থাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই টাউন হল মাঠ কাউকে বরাদ্দ না করে বিকল্প স্থানে অনুষ্ঠান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। পৃথক চিঠি উভয় পক্ষকে প্রদান করা হয়েছে।

এদিকে মনিরুল হক চৌধুরীর ব্যক্তিগত আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোতালেব হোসেন বলেন, বিধি মোতাবেক আবেদন ও মাঠের ভাড়ার টাকা জমা দিয়েও অন্য একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রের কারণে টাউন হল মাঠে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীকে সমাবেশ করতে দেয়া হয়নি। বিষয়টি আইনগতভাবে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আজ বিকল্প স্থান কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর এলাকায় তাদের সমাবেশ হবে বলেও তিনি জানান।

অপর দিকে ইয়াছিন অনুসারী আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিউল আলম রায়হান বলেন, কান্দিরপাড় দলীয় কার্যালয়ের সামনে তাদের পূর্ব নির্ধারিত দোয়া অনুষ্ঠান হবে।

এদিকে দুই গ্রুপের কর্মসূচি ঘিরে নগরীতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার সকালে টাউন হল মাঠে গিয়ে দেখা যায়, সংঘাত এড়াতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. মহিনুল ইসলাম দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে দুটি পক্ষকে টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠান না করে বিকল্প স্থানে অনুষ্ঠান করতে বলা হয়েছে। তাই দুটি পক্ষের কেউই আর বৃহস্পতিবার টাউন হল মাঠ ব্যবহার করতে পারবে না। বিকল্প স্থানে অনুষ্ঠান করতে গিয়ে সংঘাত সংঘর্ষ এড়াতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।