আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঘোষণাকৃত তালিকা অনুযায়ী রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন মেজর (অব) শরীফ উদ্দিন, রাজশাহী-১ রাজশাহী-২ (সদর) বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্টা, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়ের ও এমপি জননেতা মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী-৩ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. শফিকুল হক মিলন, রাজশাহী-৪ আসনে ডিএম জিয়াউর রহমান, রাজশাহী-৫ নজরুল ইসলাম ও রাজশাহী-৬ আসনে জেলা বিএনপির আবু সাঈদ চাঁদ।
এদিকে, বিএনপির চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়ন ঘোষণা করার আগে থেকেই সারাদেশের মানুষ সেদিকে তাকিয়ে ছিল। ঘোষণার পর পরই নেতাকর্মীরা আনন্দ উল্লাস শুরু করে। অনেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন।
রাজশাহী-১ আসনের প্রার্থী মেজর (অব) শরীফ উদ্দিন প্রথমবারের মতো প্রার্থী হচ্ছেন। তিনি বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আমিনুল হকের ভাই। অপরদিকে রাজশাহী-২ (সদর) আসনের প্রার্থী জননেতা মিজানুর রহমান মিনুর রয়েছে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে জনপ্রতিনিধিও ছিলেন। পাশাপাশি দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি, বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব এবং বর্তমানে তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিগত স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে মিজানুর রহমান মিনুর ছিল অসামান্য অবদান তিনি। তিনি পুলিশ সদস্য সিদ্ধার্থ হত্যা মামলার অন্যতম আসামীসহ রাজশাহী মহানগরীতে আ’লীগ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কৃর্তৃক যত মামলা রয়েছে তার সব মামলার মূল আসামি ছিলেন তিনি। হামলা, মামলা, নির্যাতনসহ সবকিছুর মধ্যেও তিনি রাজপথে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ছিলেন। বিরোধীদের আতঙ্ক ছিলেন মিনু। মিনু নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেন।
রাজপথে বিরোধীদের মূল টার্গেট ছিলেন মিনু। তারপরও তিনি জীবনের মায়া ত্যাগ করে বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত সকল কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেছেন। তিনি শুধু রাজশাহীর রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন তা নয়, পুরো দেশের বিএনপির বিভিন্ন সভা-সমাবেশে যোগদান করে বক্তব্য দিয়েছেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময় মিনু কক্সবাজারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ভেদ করে নেতাকর্মীদের নিয়ে স্লোগান তুলে মিছিল করেন। সে সময় তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টার্গেটে পরিণত হন।
মিজানুর রহমান মিনু রাজশাহীর বিএনপির রাজনীতিতে প্রাণপুরুষ হয়ে উঠেছেন। বর্ষিয়ান এ রাজনীতিবীদকে নগরবাসী অত্যন্ত ভালোবাসেন। তিনি রাস্তা দিলে হেঁটে গেলেও মানুষ তার কাছে আসেন। বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ান মিনু। নগরবাসীর অত্যন্ত জননন্দিত নেতা তিনি। নগরবাসীরও চাওয়া ছিল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মিনুকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া। মনোনয়ন ঘোষণার মধ্য দিয়ে জনগনের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন হয়েছে বলেই মনে করেন মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
মনোনয়ন ঘোষিত হওয়ার পর মিনু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পোস্টে লেখেন, আলহামদুলিল্লাহ! মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহর অশেষ রহমতে রাজশাহী-২ সদর আসন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন জনাব তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপি’র মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নমিনেশন ডিক্লেয়ার করেছেন। রাজশাহীবাসির কাছে আমি দোয়া চাচ্ছি, নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার জন্য আহবান জানাচ্ছি । আমি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
তিনি আরো লেখেন, একই সাথে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের নমিনেশন বা আসন ঘোষণা কে কেন্দ্র করে বা রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় এমন পোস্ট, অতিউৎসাহী কাজ (মিছিল ,আতশবাজি, শোডাউন, রং খেলা, মিষ্টি বিতরণ ইত্যাদি) থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানানো হলো। রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকবে এটি স্বাভাবিক কিন্তু প্রতিহিংসার বা আক্রোশের কোন স্থান নেই। আমাদের একমাত্র কাজ জনগণের পাশে থেকে তাদের স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো, তাদেরকে বিব্রত করা বা তাদের বিরক্তির কারণ না যেন আমরা না হই। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
রাজশাহী-৩ আসনে মনোনয়ন পাওয়া এ্যাড. শফিকুল হক মিলন একবার বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তবে ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় আ’লীগ সমর্থিত প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। তবে তিনিও দীর্ঘ সময় ধরে পবা-মোহনপুরের জনজনের সাথে মিশে কাজ কাজ করছেন।
মন্তব্য করুন