শ্রীমঙ্গলে আঙ্গুর চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের লাহারপুর দীঘিরপাড়ের কৃষক মো. সৈয়দুর রহমান তরপদার ( ফারুক)।

ছাদে এবং বাড়ির আঙিনায় টব এবং মাটিতে তিনি আঙ্গুরের চাষ করেন ২০২৩ সালের শেষের দিকে। ফারুক জানান, ইউটিউবে আঙ্গুর চাষের ভিডিও দেখে তিনি আঙ্গুর চাষে আগ্রহী হন। পরে তিনি বগুড়া থেকে প্রথম পর্যায়ে ১২ হাজার টাকা দিয়ে চয়ন জাতের ৪০ টি আঙ্গুরের চারা নিয়ে এসে চাষ শুরু করেন। স্থানীয় কৃষি অফিস ও উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তিনি আঙ্গুর চাষে সফলতা পান।

প্রথম বছর তিনি ৪০টি চারা থেকে আঙ্গুর ও চারা বিক্রি করে ৩০ হাজার টাকা আয় করেন। এতে তার খরচ বাদে বেশ লাভবান হন। এ বছর অর্থাৎ আর মাত্র ১৫ দিন পরেই তিনি আঙ্গুর বিক্রি করতে পারবেন ৫০ হাজার টাকার বলে আশা করছেন। তার বর্তমানে ৭০০ আঙ্গুরের চারা রয়েছে। এ থেকে তিনি আয় করবেন প্রায় ২ লাখ টাকা।

উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. সেলিম হোসেন জানান, তিনি কৃষক ফারুককে নিয়মিত পরামর্শ দিয়েছেন এবং ক’দিন পর পর বাগান পরিদর্শন করেছেন। কৃষি অফিস থেকে যাবতীয় পরামর্শ ও দেখভাল করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আলাউদ্দিন জানান, আমাদের দেশের উদ্ভাবিত আঙ্গুরের নিজস্ব কোনো জাত নাই। অনেকে শখের বশে বাসাবাড়িতে আঙ্গুর চাষ করে থাকেন। ফলন আশানুরূপ হয় কিন্তু মিষ্টতা কম থাকে। যারা আঙ্গুর চাষ করেন তাদের সাধ্যমতো পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আশা করা যায় যে,গবেষণার মাধ্যমে দেশের আবহাওয়ার উপযোগী জাত অবমুক্ত করতে পারলে ফলের বাজারে আঙ্গুর ফল বাজিমাত করবে। বাসাবাড়িতে ব্যাপক পরিসরে আঙ্গুর চাষ করা সম্ভব।

আঙ্গুর এমন এক প্রকারের ফল যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারি। যার ইংরেজি নাম Grape আর বৈজ্ঞানিক নাম Vitis vinifera. গাছটি Vitaceae পরিবারের অন্তর্গত। ৬টি হতে ৩০০টি পর্যন্ত আঙুর এক সাথে একই থোকায় ধরে থাকে। এর রঙ কালো, নীল, সোনালী, সবুজ, বেগুনি-লাল, বা সাদা হতে পারে। পাকা আঙুর সরাসরি খাওয়া হয় বা এটি দিয়ে রস, জেলি তৈরি করা যায়।

আমাদের দেশে রোগীর পথ্য হিসেবে আঙ্গুর ব্যাপক ব্যবহৃত হয়৷ এতে প্রোটিন, শর্করা, চর্বি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ, খনিজ, পটাশিয়াম, থায়ামিন, রিবোফ্লোবিন, ভিটামিন-এ, বি, সি উপাদান রয়েছে৷ তাছাড়া প্রতি ১০০ গ্ৰাম আঙ্গুর থেকে প্রায় ৪৫০ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়৷