দেশের দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীতে গড়ে তোলা হচ্ছে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড)। ৪১০ দশমিক ৭৮ একর জমির ওপর পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের পঁচাকোড়ালিয়া গ্রামে স্থাপিত হচ্ছে এ ইপিজেড। ইতিমধ্যে ইপিজেড এলাকায় মাটি ভরাট কাজ শুরু হয়েছে। আগামি বছরের শুরুতে উদ্যোক্তদের মধ্যে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর পটুয়াখালীতে গড়ে তোলা হচ্ছে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড)। ইপিজেডটি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট পটুয়াখালী ইপিজেড প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।

এটি বরিশাল বিভাগের প্রথম ইপিজেড। সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থায়নে নির্মিত এ ইপিজেডে ৩০৬টি শিল্প প্লট থাকবে। ব্যয় হবে ১ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। এতে ১৫৩ কোটি ডলার বা ১৬ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আসতে পারে । আয়তনে পটুয়াখালী ইপিজেড দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইপিজেড। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে এ প্রকল্পের মেয়াদ শুরু হয়। কাজ শেষ হবে ২০২৬ সালের জুন মাসে।

এদিকে ইপিজেড প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. সাইফুল্লাহ পান্না। সম্প্রতি গত ১৮ জানুয়ারি পটুয়াখালী ইপিজেড এলাকা পরিদর্শন করেন এবং ইপিজেড প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের সাথে কাজের অগ্রগতি নিয়ে কথা বলেন। পরে তিনি গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, এই ইপিজেডএ ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে দেশী ও বিদেশী উদ্যোক্তাদের দেশে আনার জন্য বিভিন্ন রকমের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে এবং সারা দেশে যাতে সুষম উন্নয়ন হয় সেই উদ্যোগও নেওয়ার কথাও বলেন তিনি। উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার জন্য দ্রæত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলা হবে বলেও জানান তিনি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিথ ছিলেন, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো, রায়হান কাওসার, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিনসহ প্রশাসক এবং ইপিজেড সংশ্লিষ্টরা।

ইপিজেড প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা জানায়, প্রকল্পের আওতায় রাস্তা, ড্রেন নির্মাণ করার পাশাপাশি চারটি ছয়তলা কারখানা ভবন, তিনটি ১০ তলা, চারটি ছয় তলা আবাসিক ভবন, একটি ৬ তলা ও দুটি ৪ তলা অফিস ভবন এবং দুটি অন্যান্য ভবন নির্মাণ করা হবে এছাড়াও বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ১৪টি ১১/০.৪১৫ কেভি সাবস্টেশন, ১৫ কিলোমিটার ১১ কেভি এইচটি লাইন ও একটি ৩৩/১১ কেভি জিআইএস সাবস্টেশন নির্মাণ ও একটি হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়াও একই প্রকল্পের আওতায় কুয়াকাটায় ২.২৫ একর জমির ওপর স্থাপিত হচ্ছে ইনভেস্টরস ক্লাব । ইপিজেড এই প্রকল্পে প্রায় ১ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে এবং ওই এলাকার লোকজনদের আর্থ-সামজিক উন্নয়ন হবে । দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ইপিজেড স্থাপনের মাধ্যমে বিনিয়োগ আহরণ, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পটুয়াখালী ইপিজেডএর প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুল কবির বলেন, আসলে প্রকল্পের দৃশ্যমান অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আমাদের প্রকল্পের ৪১০দশমিক ৭৮ একর জমির মাটি ভরাট কাজ দ্রæত গতিতে এগিয়ে চলছে। প্রকল্প এলাকার ১৫৪ টি পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য বাড়িঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ড্রেন, ফুটপাত,রাস্তা, কালভার্ট , স্কুল, সিমানা প্রচীর , প্রধান সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। আগামি এক বছরের মধ্যে আমরা উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্লট বরাদ্দ দিতে পারবো বলে আশা করছি।