সারা বছর অপেক্ষা করছিলাম এ দিনটার জন্য। কম টাকায় ইলিশ কিনে ছেলে মেয়ের প্লেটে দিব। সারাবছর জাটকাও খাইনি। এত বেশি দাম ছিল যে কিনে খাব তার সুযোগ হয়ে উঠেনি। আশা করছিলাম অবরোধের শেষ সময় কম টাকায় ইলিশ কিনে ছেলে মেয়ের মুখে তুলে দিব। তা আর হল কোথায়? কম টাকায় ইলিশ কেনার জন্য মাছ বাজারে আসছি তা আর হলোনা। যেভাবে খালি হাতে আসছি সেভাবেই চলে যাচ্ছি। দাম যেমন কমেনি, আর মাছের তেমন উপস্থিতিও নেই। কথাগুলো বলছিল পটুয়াখালীর কুয়াকাটার স্থানীয় অটোভ্যান চালক মো. জব্বার। তারমতো অনেকেই বুক ভরা আশা নিয়ে আসলেও মলিন মূখে চলে গেছে ইলিশ মাছ ক্রয় না করেই।

সুষ্ঠু প্রজনন,উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য আজ ১২ অক্টোবর মধ্যে রাত থেকে শুরু হওয়া ২২ দিনের অবরোধ চলবে ০৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এ সময় সকল প্রকার মৎস্য এবং ক্রাষ্টাশিয়াস আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ অবরোধের শেষ সমটায় কম দামে ইলিশ কিনতে মৎস্য পল্লীতে ভীড় করেছেন স্থানীয় ক্রেতারা। কম টাকায় ইলিশ ক্রয় করতে না পেরে হতাশ হয়ে গেছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা।

তাদের ভাষ্যমতে, সারাবছর ইলিশের দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় ইলিশ ক্রয় করে খেতে পারেনা। তারা অপেক্ষা করে অবরোধের এই দিনটির জন্য। শেষ সময়টায় জেলেরা সমুদ্র থেকে মাছ নিয়ে উপকূলে ফিরে আসে। মাছ চালান করার পর্যাপ্ত সময় না থাকায় স্থানীয়দের মাঝে কম টাকায় বিক্রি হয় প্রতিবছর। কিন্তু এ বছর মাছ ও দাম কোনটাই অনূকূলে না থাকায় মলিন মূখে ফিরে গেছে তারা।

স্থানীয় ক্রেতা মো. আবু জাফর বলেন, মাছ কিনতে আসছিলাম। বাজেটের মধ্যে মাছ ক্রয় করতে না পেরে ফিরে যাচ্ছি। মাছের চেয়ে ক্রেতা বেশি থাকায় মাছের দাম অনেক চড়া। তাই ফিরে যাচ্ছি।

মাছ বিক্রেতা বেলাল হাওলাদার বলেন, আজ শেষ মূহুর্তে মাছ কিনতে অনেক মানুষ ভীড় জমিয়েছেন। কিন্তু সমুদ্র থেকে ফিরে আসা ট্রলারগুলো তেমন মাছের পায়নি। ক্রেতা বেশি থাকায় মাছের দাম বেশি।

মাছ কিনতে আসা মোঃ সাইদুল ইসলাম, বাজারে বড় সাইজের ইলিশ নেই। ছোটো সাইজের ইলিশ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই ভেলা মাছ কিনে চলে আসছি।

আড়ৎদার ব্যবসায়ী আঃ রহিম খান বলেন, অবরোধের শেষে মুহূর্তে ট্রলারগুলো খালি হাতে ঘাটে এসেছে। যার কারণে সাধারণ ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, আজ মধ্য রাত থেকে ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধির লক্ষে ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে। অবরোধ সঠিকভাবে পালনের লক্ষে সব ট্রলার ইতোমধ্যেই ঘাটে ফিরছে। তবে দুই একটি ট্রলার এখনও ফিরেনি বলে আমাকে একজন ট্রলার মালিক জানিয়েছেন। আশা রাখছি রাত ১২ টার মধ্যে ফিরবেন। অবরোধ সফল করতে আগামীকাল থেকে আমাদের অভিযান চলবে।