
কলাপাড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের যাতায়তের সুবিধা নিশ্চিতে এলজিইডির অর্থায়নে পাখীমারা খালে নির্মিত হল দৃষ্টিনন্দন ভাসমান ড্রাম সেতু। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখীমারা খালের উপর নির্মিত আয়রন ব্রীজটি দুই বছর পূর্বে খালের উপর ভেঙ্গে পড়ার পর নতুন কোন সেতু নির্মিত না হওয়ায় ভীষন সমস্যায় পড়ে এলাকাবাসী। বিশেষ করে গামইরতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীরা খাল পারাপারের বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় স্কুল যেতে পারতো না। এরপর কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের উদ্দোগে এলজিইডির অর্থায়নে নির্মিত হল এ দৃষ্টিনন্দন ভাসমান ড্রাম সেতু।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৯০টি প্লাস্টিকের ড্রামের উপর কাঠের পাটাতন করে নান্দনিক এ ভাসমান সেতুটি নির্মান করা হয়। ৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং ৮ ফুট প্রস্থের ভাসমান সেতুটি দুপাশে রেলিংসহ এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে এর উপর দিয়ে নিরাপদে শিশুরা চলাচল করাসহ বাই সাইকেল চালিয়ে স্বাচ্ছন্দে খাল পার হতে পারবে। এছাড়া ড্রামগুলি এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যে, সেতুর ভারসাম্য রক্ষা করতে পারবে।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ ভাসমান সেতু নির্মানের ফলে একেবারেই পাল্টে দিয়েছে নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গামইরতলা, মজিদপুর, কুমিরমারা গ্রামীন জনপদের চিত্র। নান্দনিক এ সেতুটি নির্মানের পর প্রতিদিন শেষ বিকেলের আলোতে সেতুর উপর দাড়িয়ে ছবি তুলতেও আসছে ভ্রমন পিয়াসী মানুষজন। গামইরতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পূর্নিমা রানী বলেন, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে হঠাৎ করে একদিন খালের উপর আয়রন ব্রীজটি ভেঙ্গে পড়ে। এসময় সেতুতে থাকা ৪/৫জন শিশু-কিশোর মারাত্মক আহত হয়। এরপর নতুন করে কোন সেতু নির্মান না হওয়ায় শিশুরা স্কুল যাতায়তে দুর্ভোগে পড়ে। কেননা স্কুলের অন্তত: ৭০ ভাগ শিশু খালের ওপারের মজিদপুর গ্রাম থেকে আসে। এতে স্কুলটিতে উপস্থিতির হার আশংকাজনক ভাবে কমে যায়।
অবশেষে বিদ্যালয়টির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনা পারভিন সীমা বিষয়টি উপজেলা পরিষদের নজরে আনেন। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পাশে দাড়ায় এলজিইডি। পাখীমারা খালে নির্মিত হয় ভাসমান ড্রাম সেতু। কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনা পারভিন সীমা জানান, গামইরতলা আমার গ্রামের বাড়ী। ওটি আমার স্কুল। শিশু শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে খালের উপর এলজিইডির উদ্যেগে ভাসমান ড্রাম সেতু নির্মান করে দিয়েছে। এজন্য আমি উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়, এলজিইডি প্রকৌশলীসহ নির্মানের সময় তদারকি করেছি। যাতে ঠিকাদার শিশুদের নিরাপদ চলাচল উপযোগী করে কাজ সম্পন্ন করে। সেতুটি নির্মানের ফলে নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গামইরতলা, মজিদপুর, কুমিরমারা গ্রামের কৃষকরা এখন অনায়াসে চলাচলসহ তাদের নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় কর্মকান্ডগুলো করতে পারবে। কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল বারী পূর্ন বলেন, ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় পর সেখানে গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই কোমলমতি শিশুদের স্কুল যাতায়তে খালের উপর একটি ভাসমান ড্রাম সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এরফলে কয়েকটি গ্রামের কৃষকদের চলাচলের সুবিধাসহ তাদের উৎপাদিত কৃষি পন্য বাজারজাত করতে পারবে।
মন্তব্য করুন