মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও রোববার বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ভারি বর্ষণজনিত কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।

দেশজুড়ে চলমান আষাঢ়ে বৃষ্টি সপ্তাহজুড়ে অব্যাহত থাকতে পারে। সব বিভাগে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ এবং পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে উপকূলীয় এলাকায় দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। রোববার সন্ধ্যা থেকে আগামী বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। বৃহস্পতিবার থেকে পরবর্তী পাঁচ দিনেও বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।

সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত।

ভারি বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও রোববার বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ভারি বর্ষণজনিত কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নেই। তবে দেশের সব বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় আগামী ৫ বা ৬ তারিখ পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। বৃষ্টিপাতের প্রভাবে সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ করা হয়েছে কক্সবাজারে ১৩৪ মিলিমিটার। এ সময়ে পঞ্চগড়ে ১২৯, বাগেরহাটে ১১২, বরগুনায় ৭১, চট্টগ্রামে ৬৭, নওগাঁয় ৫৯, বান্দরবানে ৫৭, নাটোরে ৫৫, কুষ্টিয়ায় ৫৪, নেত্রকোনায় ৪৬, গাইবান্ধায় ৪৩, মাগুরায় ৪২, ঠাকুরগাঁওয়ে ৪১, কিশোরগঞ্জে ৪০, পিরোজপুর ও ঝালকাঠিতে ৩৭, ঝিনাইদহ ও রাঙামাটিতে ৩৪, ঢাকায় ৩২, ও সিলেটে ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে।

এ সময়ে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি নথিবদ্ধ করা হয়েছে পাবনার ইশ্বরদীতে। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি নথিবদ্ধ করা হয়েছে বান্দরবানে।

সিলেট-সুনামগঞ্জে স্বল্পমেয়াদি বন্যার শঙ্কা: পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারি বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে সিলেট ও সুনামগঞ্জে নদনদীর পানি বাড়বে, যার প্রভাবে নিম্নাঞ্চলে বন্যা হতে পারে। দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানান, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, পুরাতন-সুরমা, সারিগোয়াইন নদীগুলোর পানি সমতল দ্রুত বাড়ছে। এর ফলে সিলেট, সুনামগঞ্জের কিছু নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।