উপকূলীয় এলাকায় অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব পড়েনি। দুপুরের পর থেকে আকাশে উঠেছে রোদ। শান্ত রয়েছে বঙ্গোপসাগর। দু’দিন বিরতির পর কুয়াকাটা সৈকতে নেমেছে ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা। রবিবার ১৪মে শেষ বিকেলে সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য অবলোকন করতে কুয়াকাটা সৈকতে নামেন কয়েক হাজার পর্যটক ও দর্শনার্থী। রবিবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সৈকত দু’দিন খালি থাকার পর শেষ বিকেলে পর্যটক দর্শনার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে কুয়াকাটা। পর্যটকরা সৈকতের নোনা জলে নেমে হাঁটাহাঁটি করছেন। সমুদ্রের সৌন্দর্যমন্ডিত রূপ মোবাইলফোনে ধারণ করছে তারা। কেউ আবার ঘোড়ায় চড়ে সৈকতে ঘোরাঘুরি করছেন, অনেকে আবার ছাতার নিচে বেঞ্চিতে বসে সাগরের অপরূপ দৃশ্য অবলোকন করছেন। শুধু জিরো পয়েন্ট এলাকায় নয় সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন পর্যটকরা। সৈকতের তীরে অবস্থানরত পর্যটকরা জানান, গত দুইদিন কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ ও মহিপুর থানা পুলিশের বাধার কারণে সৈকতে নামতে পারেননি তারা। এক ধরনের বন্দীদশার মধ্যে ছিলেন তারা। পুলিশের বার বার মাইকিংয়ের কারনে বিরক্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোখার আগাম সতর্কতার অংশ হিসেবে প্রশাসনের বাঁধা নিষেধ মানতে বাধ্য হয়েছেন তারা। তবে এমন কোন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে সৈকতেই নামা যাবে না। সমুদ্রে নেমে গোসল করা নিষেধ করলেই হতো। বগুড়া থেকে ঘুড়তে আসা টিনা-জালাল দম্পতি বলেন, গত দুদিনে পুলিশের বাড়াবাড়িতে অতিষ্ঠ ছিলাম। সৈকতে নামলেই পুলিশ মাইকিং করে। আবার অনেক সময় কাছে এসে উঠিয়ে দিয়েছে। রবিবার দুপুরের পর পুলিশের মাইকিং বন্ধ হয়েছে। এখন শান্তিতে ঘুড়তে নামছি। গত দু’দিনের চেয়ে সোমবার বিকেলে সমুদ্র দেখতে দারুন লাগছে। যশোর থেকে সপরিবারে ঘুড়তে আসা মবিন রহমান জানায়, তিনিও দুদিন এক ধরনের অস্বস্তির মধ্যে ছিলেন। বিকেলে সৈকতে ঘুড়তে নেমেছে। সৈকতের ঝাউবাগান পয়েন্টে কথা হলে তিনি বলেন, হঠাৎ এত লোক কোথা থেকে আসলো ! সকালেও সমুদ্র ফাঁকা ছিল। বিকেলের আবহাওয়া ও সমুদ্রের রূপ দেখে মুগ্ধ হয়েছি আমরা। নোয়াখালীর ব্যবসায়ী নুরুল হক গত সপ্তাহে কুয়াকাটা এসেছিলেন একখন্ড জমি কিনতে। তিনি কুয়াকাটার পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেলাপাড়ায় জমি কিনেছেন। তিনি বলেন, গতকালের চেয়ে রবিবার বিকেলের আবহাওয়া অনেক ভালো। বড় বড় ঢেউ সৈকতের তীরে আছড়ে পড়ছে। ঢেউয়ের শব্দ আমাকে খুব মুগ্ধ করেছে। কুয়াাকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের ওসি হাসনাইন পারভেজ বলেন, আপাতত: পর্যটকদের সমুদ্রে গোসল করতে নামতে দেয়া হচ্ছে না। তবে সৈকতে ঘোরাঘুরি করতে পারছেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সোমবার সকালে আগত পর্যটকদের পরবর্তী নির্দেশনা দেয়া হবে বলে তিনি জানান।