চলতি শীত মৌসুমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফের শুরু হয়েছে শ্বাসতন্ত্রের প্রাণঘাতী রোগ করোনার নতুন ঢেউ। গত এক মাসে বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণের শতকরা হার বেড়েছে ৫২ শতাংশ।

করোনায় মৃত্যুর হারেও পরিলক্ষিত হচ্ছে ঊর্ধ্বগতি। গত ২৮ দিনে বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার বেড়েছে আট শতাংশ।

শনিবার এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ক অঙ্গসংগঠন বিশ্ব স্থাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বিবৃতিতে ডব্লিউএইচও বলেছে, ‘করোনা মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৭ কোটি ২০ লাখ মানুষ এবং তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৭০ লাখ জনের। বেশ কয়েক মাস বিরতির পর নভেম্বর থেকে ফের বাড়তে শুরু করেছে করোনা সংক্রমণ।’

‘আমাদের হাতে থাকা তথ্য বলছে, নভেম্বরের ১৭ তারিখ থেকে ডিসেম্বরের ১৭ তারিখ পর্যন্ত এক মাসে বিশ্বে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার মানুষ এবং তাদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন ১ হাজার ৬০০ জন। গুরুতর অসুস্থদের হাসাপতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।  শতকরা হিসেবে এক মাসে বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ বেড়েছে ৫২ শতাংশ।’

সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতির জন করোনাভাইরাসের নতুন একটি ধরন বা ভ্যারিয়েন্ট জেএন ডট ১ দায়ী করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই ধরনটি আসলে এই ভাইরাসটির ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপধরন বা সাব ভ্যারিয়েন্ট বিএ ডট ২ ডট ৮৬ উপধরন থেকে উদ্ভূত। গত ১৮ ডিসেম্বর জেএন ডট ১-কে ভ্যারিয়েনর্ট অব ইন্টারেস্ট ক্যাটাগরিভুক্ত করেছে ডব্লিউএইচও।

জেএন ডট ১ খুব উদ্বেগ জাগানিয়া কোনো ভাইরাস নয়। যদিও করোনা ভাইরাসের এই ধরনটির ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা ব্যাপক তবে ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, জেএন ডট ১’র জন্য আলাদা কোনো টিকার প্রয়োজন নেই। বর্তমানে বাজারে যেসব টিকা রয়েছে, এই ভ্যারিয়েন্টটি থেকে সুরক্ষা নিশ্চিতে সেগুলোই যথেষ্ট।

‘মহামারির প্রথম পর্যায়ে করোনাভাইরাস যে আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছিল, এখন সেই অবস্থা নেই। জেএন ডট ওয়ান ভাইরাসটির প্রভাবে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর চাপ পড়বে— তেমন আশঙ্কাও আপাতত নেই। তারপরও অসুস্থতাজনিত ভোগান্তি এড়াতে বিশ্ববাসীকে এই ভাইরাসটি সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে,’ বিবৃতিতে বলেছে ডব্লিউএইচও।