পটুয়াখালীর সাগরকণ্যা কুয়াকাটা বেড়াতে আসা তিন দর্শনার্থীর সাথে সমুদ্র সৈকতে বসেই প্রথমে পরিচয় হয় স্থানীয় এক তরুনের সাথে। সেখান থেকে চা-সিগারেট ও বিভিন্ন আলাপচারিতার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় ছাতা বেঞ্চীতে বসে তাদের আড্ডা। কুয়াকাটার স্থানীয় তরুন নিজেই আগত দর্শনার্থীদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেন। স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে সুবিধা মনে করে তাদের সাথে ঐ তরুনকে নিয়ে যায় হোটেলে, রাতভর আড্ডা শেষে সবাই ঘুমিয়ে পরলে সর্বস্ব লুট করে পালিয়ে যায় চোর হৃদয় মোল্লা। বলছিলাম বরিশাল থেকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা তিনজন দর্শনার্থীর সাথে অভিনব চুরি হয়ে যাওয়ার ঘটনা।

গত বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) কুয়াকাটা সৈকতে বসে বখাটে খ্যাত হৃদয় মোল্লার সাথে পরিচয় হয় বরিশাল থেকে আসা বাঁধন সাহা সহ তার তিন বন্ধুর সাথে। অভিনব কৌশলে তাদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে রাত্রি যাপন করে হোটেলে বীচ ডোরের একটি কক্ষে। গভীর রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে হৃদয় মোল্লা পর্যটকদের মোবাইল ফোন, ডিএসএলআর ক্যামেরা ও নগদ ৩২ হাজার টাকা নিয়ে হোটেন থেকে পালিয়ে যায়।

শুক্রবার (৫ অক্টোবর) সকালে তারা হৃদয় মোল্লা কে অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে ট্যুরিষ্ট পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে ঘটনার তদন্তে নামেন তারা। এবং ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে চোর হৃদয় মোল্লাকে গ্রেফতার করে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

এ বিষয় ভুক্তভোগী পর্যটকরা বলেন, আমরা সৈকতে বসা ছিলাম। তখন হঠাৎ করে এসেই আমাদের সাথে গল্প করতে শুরু করে হৃদয় মোল্লা। কুয়াকাটার স্থানীয় বলায় আমরাও তার সাথে দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলাপচারিতা করি।সে আমাদের সাথে খুব ভালো আচরণ করায় আমরা তাকে রাতের খাবারের আহ্বান করি। পরে আমাদের সাথে হোটেলে যায় এবং খাবার খেয়ে রাতে আমরা ঘুমিয়ে পড়লে আমাদের ক্যামেরা,মোবাইল এবং টাকা নিয়ে সে পালিয়ে যায়। কুয়াকাটা হোটেল বীচ ডোর এর ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, গত ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বরিশাল থেকে আসা চার জন পর্যটক আমাদের হোটেলের ২০৪ নম্বর কক্ষটি ভাড়া নেয়। এবং রাতে তাদের সাথে হোটেলে স্থানীয় একটি ছেলে আসে। সকালবেলা শুনি তাদের মালামাল নিয়ে ওই ছেলে পালিয়ে গেছে। আমি তাৎক্ষণিক ট্যুরিষ্ট পুলিশকে বিষয়টি অবগত করি। জানা যায়, স্থানীয় ঐ চোর কুয়াকাটা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ রুহুল মোল্লার ছেলে।

এ বিষয় টুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, কুয়াকাটা বীচ ডোর হোটেল থেকে পর্যটকদের মালামাল চুরি হয়েছে এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আসলে আমরা ঘটনার সূত্র ধরে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি টিম তদন্তে নামি।

বিভিন্ন কৌশলে এবং একাধিক সোর্সের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চোর হৃদয় মোল্লাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। এবং চুরি হয়ে যাওয়া মালামাল তার বাসা থেকে উদ্ধার করি। তবে এ সময় হৃদয়ের কাছে কোন নগদ টাকা পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় মহিপুর থানায় একটি চুরি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আমরা পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।