একসময় সংসারের অভাব-অনটনে নিত্যদিন সংগ্রাম করতেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের সুনিতি রানি হাওলাদার। তবে এখন তিনি এলাকার পরিচিত এক সফল নারী উদ্যোক্তা। পরিশ্রম, অধ্যবসায় আর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ)-এর সহায়তায় চারা উৎপাদনকে পুঁজি করে তিনি গড়ে তুলেছেন নিজের ভাগ্য।

নিজ বাড়ির উঠান ও মাত্র ৩৩ শতাংশ জমিতে হাইব্রিড ও দেশি জাতের সবজি চারা উৎপাদন করে বর্তমানে মাসে গড়ে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় করছেন সুনিতি রানি। বছরে তার আয় দাঁড়ায় লাখ টাকায়। স্থানীয় বাজারগুলোতে তিনি বেগুন, টমেটো, লাউ, মরিচ ও শালগমসহ বিভিন্ন সবজি চারা বিক্রি করেন।

সুনিতি জানান, শুরুতে হাতে ছিল খুব অল্প মূলধন। পরে এসডিএফ-এর সদস্য হিসেবে যুক্ত হয়ে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেন এবং সংস্থাটির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে কৃষি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি প্রতিবছর ১০ থেকে ১২ লাখ চারা উৎপাদন করছেন। এসব চারা বিক্রি করে অর্জিত অর্থের পাশাপাশি অবশিষ্ট চারাগুলো দিয়ে সবজি চাষ করে অতিরিক্ত দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় করেন।

তার স্বামী বলেন, “আমরা লাউ ও মরিচের চারা ১০ টাকা, টমেটো চারা ১ থেকে ২ টাকা, শালগম চারা ২ টাকা এবং দেশি মরিচ চারা প্রতি হাজার ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করি। এসব বিক্রি করেই এখন সংসার চলে বেশ ভালোভাবে।”

সুনিতির ছেলে জয়ন্ত হাওলাদার জানান, “মায়ের পরিশ্রমের টাকাতেই আমরা ঘর তুলেছি, ভালোভাবে খাওয়া-পড়াশোনা করছি।”

নীলগঞ্জ ইউনিয়নের এসডিএফ ক্লাস্টার অফিসার চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, “আমরা উপকারভোগীদের নির্বাচন করে স্বল্পসেবামূল্যে ঋণ প্রদান ও মাঠপর্যায়ে কারিগরি সহায়তা দিই। সুনিতি রানির সাফল্য আমাদের কর্মসূচির বাস্তব প্রমাণ।”

তিনি আরও বলেন, “অধ্যবসায়, প্রশিক্ষণ ও আত্মবিশ্বাসের সমন্বয়ে সুনিতি আজ এলাকার নারীদের কাছে অনুপ্রেরণার প্রতীক।”