ঘোড়ার গাড়ীতে চড়ে কনে বাড়ীতে গিয়ে বিয়ে করে ঐ ঘোড়ার গাড়ীতেই নববধূকে নিয়ে বাড়ী এলেন বর। একসময় গ্রাম বাংলায় এমনই ছিল প্রচলন। আধুনিক যুগের এই সময়ে এসে পুরোনো রীতিতে বিয়ের আয়োজন নজর কেড়েছে এলাকাবাসীর। ঘোড়ার গাড়ীতে চড়ে বিয়ে করার গ্রামীণ এ দৃশ্য দেখা গেছে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের সুবিদখালীতে। বরের বন্ধুদের এমন ব্যতিক্রমী আয়োজনে মুগ্ধ এলাকাবাসী।

জানা গেছে,প্রাচীন ঐতিহ্য ঘোড়ার গাড়ীতে চড়ে বর সেজে বিয়ে করতে কনের বাড়ীতে যান মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিদখালী বন্দরের মোঃ আবু জাফরের ছেলে মোঃ সাইফুল ইসলাম। ১০ টি মোটরসাইকেল, ৪ টি মাইক্রোবাসে অর্ধশতাধিক বরযাত্রী নিয়ে ঘোড়ার গাড়ীতে চড়ে কনের বাড়ী একই উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামে যান বর সাইফুল ইসলাম। মঙ্গলবার (০১ এপ্রিল) দুপুরে বিয়ের এমন দৃশ্য দেখতে ভিড় জমিয়েছিল নানা বয়সের মানুষ।

উপজেলার সুবিদখালী বন্দরের বাসিন্দা আবু জাফরের পূত্র ও শিল্প প্রতিষ্ঠান দেশবন্ধু গ্রুপের (বেভারেজ) বরিশাল ডিপোর হিবাস রক্ষক মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে বিয়ে হয় একই উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের মোঃ বশির হাওলাদারের একমাত্র কন্যা মোসাঃ তানিয়া আক্তারের সাথে। মঙ্গলবার (০১ এপ্রিল) দুপুরে অর্ধশতাধিক বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়ীতে যান সাইফুল ইসলাম। এ সময় কনের বাড়ীর এলাকার উৎসুক সাধারন মানুষ ঘোড়ার গাড়ীকে এক নজর দেখার জন্য ভীড় জমান এবং মুঠোফোন সেলফিও তোলেন।
বর সাইফুল ইসলামের কয়েকজন বন্ধুর উদ্যোগে গ্রামীণ ঐতিহ্য ঘোড়ার গাড়ীতে নববধূকে আনতে এমন নজরকাড়া আয়োজন করা হয় বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। আধুনিক যুগের এই সময়ে এসে পুরোনো রীতিতে বিয়ের আয়োজন মুগ্ধ করেছে বর ও কনের পিতা মাতাসহ এলাকার মানুষকে।

বরের পিতা মোঃ আবু জাফর বলেন, আমার বড় ছেলে সাইফুল ইসলামের বিয়েতে ঘোড়ার গাড়ীতে করে বৌ আনা আমাদের এলাকায় একটি ব্যতিক্রম বিয়ের আয়োজন। ঘোড়ার গাড়ীতে চড়ে বিয়ে করতে যাওয়ার প্রচলন আমাদের এলাকায় ছিলনা, এমন ব্যতিক্রম আয়োজন আমাদের এলাকায় এইবারই প্রথম। এমন আয়োজনে আমরা বর ও কনের দুই পরিবার সহ এলাকার সকল মানুষ খুশি। সন্তান সমতূল্য আমার ছেলের বন্ধুদের এমন ব্যতিক্রম আয়োজনে ওদের প্রতি আমার দোয়া রইলো।

বর সাইফুল ইসলামের বন্ধু বিকাশ দাস,জহির হাসান, মোঃ কাইউম, মোঃ আবদুস সবুর জানান, ঘোড়ার গাড়ীতে বিয়ে করতে কনের বাড়ীতে যাওয়ার এমন গ্রামীণ রীতি বেশ পুরোনো, ঘোড়ার গাড়ীতে বিয়ে করতে যাওয়ার রীতি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। বর্তমান আধুনিক যুগে গ্রামীণ ঐতিহ্য ঘোড়ার গাড়ীতে বৌ আনার এমন ব্যতিক্রম আয়োজন মির্জাগঞ্জ উপজেলায় আমরাই প্রথম করেছি। বন্ধুর খুশি ও এলাকার মানুষকে বিয়ে বাড়ীতে ঘোড়ার গাড়ী ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে এই ব্যতিক্রম আয়োজন করেছি।

প্রতিবেশী মোঃ আবদুর রশিদ মিয়া ও কাওসার হোসেন বলেন, অনেকদিন পর গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঘোড়ার গাড়ীতে চড়ে কনের বাড়ীতে যাওয়ার এই দৃশ্যটি খুবই ভালো লেগেছে। এমন ঘটনা এলাকার সকল মানুষ মুগ্ধ। গ্রাম বাংলার এই দৃশ্য বার বার ফিরে আসুক।