আলোচিত সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু রহস্যের ইতি টানল ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)। অভিনেতার মৃত্যুর ৫ বছর কেটে গেলেও ধোঁয়াশা ছিল তার মৃত্যু নিয়ে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইনের।

এবার সে প্রশ্নের খোলাসা করে দিয়েছে সিবিআই। শনিবার (২২ মার্চ) মুম্বাই আদালতকে এই মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই। জানিয়ে দিয়েছে, আত্মহত্যাই করেছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত।

প্রাথমিকভাবে, মামলাটি আত্মহত্যা বলেই জানানো হয়েছিল। শেষ রিপোর্টেও সিবিআই নিশ্চিত করেছে, আত্মহত্যাই করেছিলেন অভিনেতা। তদন্তে অন্য কোনো দিক উঠে আসেনি।

সুশান্তের পরিবারের অভিযোগ ছিল, এই মৃত্যুর নেপথ্যে রয়েছেন রিয়া চক্রবর্তী ও আরও অনেকে। উঠে আসে মাদক সরবরাহ, মানসিক হয়রানি, টাকার জন্য চাপ দেয়া, এমনকি কালাজাদু করার অভিযোগও। সরাসরি আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগ আনে সুশান্তের পরিবার।

তবে আত্মহত্যার তত্ত্বকেই সমর্থন করেছে সিবিআই। তারা এমন কোনও প্রমাণ পাননি, যাতে প্রমাণ হয় সুশান্ত সিং রাজপুতকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়া হয়েছিল। দুটি এফআইআর থেকেই রিয়া চক্রবর্তী, তার ভাই সৌভিক ও মা-বাবার নাম বাদ দিতেও বলা হয়েছে।

২০২০ সালের ১৪ জুন বান্দ্রার ফ্ল্যাটে সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ২০২০ সালের আগস্টে বিহার পুলিশ থেকে তদন্তভার নেয় সিবিআই। দীর্ঘ চার বছরের তদন্ত শেষে সিবিআই সুশান্তের মৃত্যুতে শেষ রিপোর্ট জমা দিয়েছে।

অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সের ফরেনসিক টিমও রিপোর্টে জানিয়েছে, সুশান্তকে খুন করা হয়নি। আত্মহত্যা করেই ৩৪ বছর বয়সী বলিউড অভিনেতার মৃত্যু হয়েছিল। সুশান্তের ল্যাপটপ, হার্ড ডিস্ক, ক্যামেরা ও দুটি মোবাইল থেকেও কিছু পাওয়া যায়নি ফরেনসিক পরীক্ষায়।

২০০৮ সালে রাজপুত বালাজি টেলিফিল্মস প্রযোজিত ‘কিস দেশ মে হ্যায় মেরা দিল’ হিন্দি ধারাবাহিকে প্রিত জুনেজার চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০০৯ সালে তিনি ‘পবিত্র রিস্তা’ ধারাবাহিকে মানব দেশমুখের চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০১০ সালে তিনি ‘ড্যান্স আপাতবাস্তব’ টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘ঝলক দিখলা জা ২’-এ ‘মস্ত কলন্দর বয়েজ’ টিমে অংশগ্রহণ করেন।

২০১০ সালে তিনি ‘ঝলক দিখলা যা ৪’-এ অংশগ্রহণ করে ‘মোস্ট কনসিস্টেন্ট পারফর্মার’ পুরস্কার পান। ২০১১ সালে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় করবেন বলে ‘পবিত্র রিস্তা’ ধারাবাহিকের কাজ ছেড়ে দেন।

২০১৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাওয়া অভিষেক কাপুর পরিচালিত ‘কাই পো চে!’ রাজপুতের প্রথম চলচ্চিত্র। এই ছবিটি সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত হয় এবং বাণিজ্যিকভাবেও সফল হয়। এরপর রাজপুত মনীষ শর্মা পরিচালিত ‘শুদ্ধ দেশী রোমান্স’ ছবিতে পরিণীতি চোপড়া ও বাণী কাপুরের বিপরীতে অভিনয় করেন। এই ছবিটিও বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়। রাজকুমার হিরানী পরিচালিত ‘পিকে’ চলচ্চিত্রে রাজপুত একটি ছোটো চরিত্রে অভিনয় করেন।

দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত ‘ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী’ ছবিতে রাজপুত বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত গোয়েন্দা রচিত্র ব্যোমকেশ বক্সীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।