বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, রাসিকের সাবেক মেয়র ও এমপি জননেতা মিজানুর রহমান মিনু বলেছেন, এ দেশের মানুষ কখনোই কারো কাছে মাথা নত করেনি ও আর করবেও না। আগামীতে মাথা উঁচু করেই আমরা সবাইকে নিয়েই ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশকে রক্ষা করবো।

আজ মঙ্গলবার জাতীয়তাবাদী পেশাজীবী পরিষদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে রাবির টিএসসিসিতে আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, মানুষের হৃদয়ের নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তার যে উক্তি ব্যক্তির চেয়ে দল ব, দলের চেয়ে দেশ বড়। দেশের মানুষ ও দেশকে তিনি সবসময় প্রাধান্য দিয়েছেন। আমাদের প্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখন আল্লাহর রহমতে সুস্থ আছেন। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব। তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দীর্ঘ সময় স্বৈরচারী হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন সফল করেছেন। আজকে সারাদেশের মানুষ উনার দিকে তাকিয়ে আছেন। আশা করছি খুব দ্রুত আমাদের নেতা তারেক রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া দেশে ফিরে আসবেন।

এই মুহূর্তে রাজশাহী বাংলাদেশের ১ নম্বর বিশ্ববিদ্যালয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে আছে। এটি আমাদের জন্য গর্ব। আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ১৯৬৯ এই পবিত্র মাটিতে নিজের জীবন উৎসর্গ করে তিনি সমগ্র জাতির সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। যার ফলে গণঅভ্যুথানের মাধ্যমে উজ্জবিত হয়ে এ দেশ পরবর্তীতে স্বাধীন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ রাখবো তিনি যে স্থানে শাহাদত বরণ করেছেন তার সামনে গেটের পাশে সেখানে একটি ভালো জায়গা ঠিক করে তার জীবনী লেখার ব্যবস্থা করা। যাতে সবাই তার ইতিহাস জানতে পারে। এরমধ্যে দিয়ে আমরা তাকে সম্মান করবো। ড. জোহা আমাদের গর্ব ও অহংকার। সারা বাংলাদেশের কাছে তিনি অহংকার।

গত আন্দোলন সংগ্রামে শহীদ আবু সাইদ যেদিন বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে শাহাদত বরণ করেন তার আগের দিন তিনি বলে গেছেন, মনে হচ্ছে স্যার আপনি যদি বেঁচে থাকতেন, আর যদি আমাদের সামনে থাকতেন তাহলে আমরা এ আন্দোলনে বিজয়ী হতাম। আপনি আমাদের রেখে চলে গেলেন, আমাদের ভাগ্যে কি আছে জানি না। তিনিও আমাদের গর্ব। সেজন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো তার নামে কোনো একটি প্রতিষ্ঠানে নামকরণ করা। আমাদের মাটিতে শাহাদত বরণ করেছেন বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। তার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো হল স্থাপন করা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যা কিছু আমরা সবাই মিলে করেছি। একক কারো কৃতিত্ব নেই। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সরকার সহযোগিতা করেছিল। আমাদের অন্যতম প্রবীণ নেতা এমরান আলী সরকার তার নামে একটি হল যেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ করে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো রাবি করতে গিয়ে হাজার হাজার পরিবার পথে বসে গেছে, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আজকে যারা এ অঞ্চলের যারা থার্ড জেনারেশন তাদের ফাস্ট জেনারেশনের কাছে শত শত বিঘা জমি ছিল, এখন নেই। ত্যাদের ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। সেজন্য এই বিশ্ববিদ্যায়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের পরিবার থেকে আগামী দিনে কোনো র্কম সংস্থান হলে তাদের পুনর্বাসন করা। আমি যেখন মেয়র ছিলাম, তখন এটি তৈরি করেছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছিলাম এবং আমরা সফল হয়েছিল।

অতীতে দেখেছি দূর থেকে কেউ এখানে এসে তার সঙ্গে সঙ্গে আত্মীয়দের চাকুরী দিয়েছে। কিন্ত না। অনেক পরিবার আজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যারা আন্দোলন সংগ্রামে শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আমরা শহীদ জিয়ার সৈনিক লড়তে জানি, হাসি মুখে মরতে জানি, দেশকে রক্ষা করতে জানি। আমরা সেই দল তুষার ঘরে হানবো আঘাত, আমরা আনিবো রাঙ্গা প্রভাত। যত প্রতিকূলতা থাকুক না কেন এদেশের মানুষ কোনদিন মাথা নতো করেনি আর করবেও না।

সবশেষে তিনি বলেন, রাবি থেকে একজন প্রফেসরকে শিক্ষা উপদেষ্টা করার কথা ছিল। কিন্ত ড. ইউনুস তা করেননি। এ উত্তরাঞ্চলকে অপমাণিত করেছেন। আমরা আপনাকে সম্মান করি। তবে ভবিষ্যতে এর জন্য আপনাকে জনগনের কাছে জবাবদিহিতা করতে হতেও পারে।

রাবি পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন উৎপলের সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক ছিলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাবি জিয়া পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. এনামুল হক, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম রাবির সভাপতি প্রফেসর ড. আব্দুল আলিম।