
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর মৃত্যুর ১০ বছর পর হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনের নামোল্লেখ করে মামলা হয়েছে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিএনপি নেতা পিন্টুর ছোট ভাই নাসিম উদ্দিন রিন্টু বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেছেন। শুনানি শেষে আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তা তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক, হাজি সেলিম, ইরফান সেলিম, তৎকালীন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, রাজশাহীর উপ কারা মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) বজলুর রশিদ, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান এবং জেলার শাহাদাত হোসেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন পিন্টুকে ২০০৯ সালে সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি করা হয়। এ মামলায় ওই বছরের ৩ জুন পিন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও আদালত এ মামলার রায়ে নাসির উদ্দিন পিন্টুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য রিমান্ডের নামে নির্যাতন করে পিন্টুকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়। পরে পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আকতার কল্পনা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। এছাড়া ২০১৪ সালে পিন্টুর চিকিৎসার জন্য উচ্চ আদালতে পিটিশনও দাখিল করেন।
এরপর আদালত নিজ খরচে পিন্টুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ আই হসপিটালে নিয়মিত চিকিৎসার নির্দেশ দেন। কিন্তু আদালতের এ নির্দেশ অমান্য করে প্রথমে তাকে নারায়ণগঞ্জ ও পরে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আদালতের চিঠি পেয়ে ২০১৫ সালের ২ মে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা. রইছ উদ্দিন কারাগারে গেলেও কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার অজুহাতে পিন্টুকে চিকিৎসার সুযোগ দেয়নি। এর পরদিন তার মৃত্যু হয়। তবে রাজশাহীর তৎকালীন ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশিদ ওই সময় নাসির উদ্দিন পিন্টুর মারা যাওয়ার ঘটনাকে ‘নরমাল ডেথ’ বলে প্রচার করেন।
মামলা দায়েরের পর বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক রানা জানিয়েছেন, আদালত হত্যা মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন