
দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলিতে বাড়ির পার্শ্ববর্তী পুকুর খনন কাজে ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ন সাঃ সম্পাদক সারোয়ার আলম এর বিরুদ্ধে ১০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ঐ নেতার দাপট ও প্রভাবে গ্রামবাসী অতিষ্ঠ।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) উপজেলার ৩ নং আলিহাট ইউনিয়নের আগত রিকাবি গ্রামের ভুক্তভোগী মৃত ইউনুস আলীর ছেলে আবু মুসার বাড়িতে গিয়ে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
অভিযুক্ত সারোয়ার আলম আলিহাট ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পদে দ্বায়িত্বে আছেন। ইতিপূর্বে সরোয়ার আলম ৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পদে দ্বায়িত্বে ছিলেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস উপজেলা নেতৃবৃন্দের।
ভুক্তভোগী আবু মুসা একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তা দিয়ে কোন রকমে তার সংসার চলে। আবু মুসা অভিযোগ করে বলেন, গত বছর আমার বাড়ির পাশে ছোট একটি গর্ত খনন করে আর এক পাশে গর্ত পুরন করবো মর্মে একই গ্রামের বিএনপি নেতা সারোয়ার আলম কে বলেছিলাম। কিন্তু সে ভ্যাকু না নিয়ে আসায় এবার নিজেই কথা বলে ভ্যাকুর ব্যবস্থা করে পুকুর খননের কাজ শুরু করি।
খবর পেয়ে সারোয়ার আলম আমার বাড়িতে আসে এবং আমাকে হুমকি দেয় এবং বলেন পুকুর খনন করতে হলে আমাকে ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে। অন্যথয় ভ্যাকু সহ তোকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিব। একপর্যায়ে আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক ১০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। তরপরে আমি পুকুর খনন করি। ক্ষমতায় না আসতেই তার যে দাপট আর প্রভাব। তাতে মনে হয় ক্ষমতায় এলে তার অত্যাচারে আমরা এই গ্রামে বসবাস করতে পারবো না। আমরা তো আর রোহিঙ্গা নয় যে বিচার পাবো না।
আবু মুসার স্ত্রী মৌ বলেন, আমার স্বামী ছোট একটা ব্যবসা করে। সে সকাল দশটায় বাড়ি থেকে বাহির হয়ে যায় আর রাত দশটায় বাড়িতে ফিরে আসে। এতে আমাদের কোন রকম সংসার চলে। আর আমাদের মতো লোকের কাছে গ্রামের মানুষ হয়েও পুকুর খনন কাজে বাধা ও হুমকি ধামকি দিয়ে আমার স্বামীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে যায় সারোয়ার। এটার আমি সুষ্ঠ বিচার চাই। মৌ মৃদু কন্ঠে বলেন আপনারা চলে গেলে হয়তো সরোয়ার আবার এসে আমাদের হুমকি দিতে পারে।
সারোয়ার আলম এর আপন জেঠাতো বোন মৌসুমি আক্তার বলেন, আমার বাবা গত ২০ বছর আগে মৃত্যু বরন করেন। আমার বাবার সম্পতি (জমিজমা) বাহির করার জন্য কয়েক বার গ্রামের দেওয়ানে মাতব্বরের কাছে যাই। সব শেষে আমার জেঠাতো ভাই, বিএনপি নেতা সারোয়ার আলম এর কাছে গেলে সে আমার মা এর কাছে বলে টাকা ১০ হাজার দিলে আমি জমি বাহির করে দিব। আমার বাবার জমি বাহির করতে কেন আমি টাকা দিব বুঝি না। আমি টাকা দেয় নাই তাই কাজও হয় নাই।
এবিষয়ে অভিযুক্ত সারোয়ার আলম মুঠো ফোনে বলেন, পুকুর খননের বিষয়ে আমার সাথে ৭০ হাজার টাকা কন্ট্রাক হয়। পরে ১০ হাজার টাকা নিয়ে জামেলা। আর আমার বিরুদ্ধে যে ১০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে যে ভিডিও বক্তব্য দিয়েছে তা মিথ্যা। কিছু বললে আমার সামনে বলতে হবে। তার বোনের বিষয়ে বললে তিনি বলেন, আমি শুনলাম আমার বোন আমার বিরুদ্ধে বলেছে। আমি বাড়ি যায় তারপর তাকে ধরবো।
হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী বলেন, বিষয়টি আমার কানে আসছে। তবে তদন্ত সাপেক্ষে সারোয়ার আলম দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ ফেরদৌস রহমান বলেন, আমার বিএনপির কোন নেতাকর্মী চাঁদাবাজি বা কোন দূর্নীতি করে থাকলে বিএনপির তদন্তের মাধ্যমে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সারোয়ার আলম এর বিষয়ে বললে সভাপতি বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টা প্রথম শুনলাম। আমি ঘটনার তদন্ত করবো এবং সে যদি দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ভাবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।
মন্তব্য করুন