
মহান বিজয় দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। এরপর ঝাউতলায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
পরে সার্কিট হাউস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং ডিসি স্কয়ারে বিজয় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার জাহিদ, সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম কবির হাসানসহ জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। মসজিদে দোয়া মাহফিল, মন্দিরে পূজা, গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা এবং প্যাগোডায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালিত হয়। একই সঙ্গে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে।
জেলা শহরের সরকারি, আধা-সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়, যা দিবসটির তাৎপর্যকে আরও গৌরবান্বিত করেছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বক্তব্য দেন। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সর্বাত্মক সম্মান ও সহযোগিতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের সবার।”
জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, “মহান বিজয় দিবস আমাদের জন্য এক গৌরবময় দিন। আমাদের পূর্বপুরুষদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত রাখতে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।”
সেনাবাহিনীর মেজর ইমরুল কাইস মেহেদী বলেন, “স্বাধীনতা অর্জনের চেয়েও স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। এজন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।”
পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “আমাদের নিজেদের দেশের উন্নতির জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে কর্মসূচি আয়োজন করেছে। সার্বিকভাবে দিনটি ছিল বিজয়ের আনন্দ ও গৌরবময় ইতিহাস স্মরণ করার এক অনন্য আয়োজন।
মন্তব্য করুন