পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পিতা-পুত্রে’র বিরুদ্ধে মানবপাচারকারী ও প্রতারণা মামলায় আব্দুল করিম গাজীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১৫ নভেম্বর শুক্রবার সকালে নিজ বাড়ি থেকে কলাপাড়া থানা পুলিশ গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। প্রতারক চক্রের মূল হোতা পুত্র রাকিবুল ইসলাম ওমানী পালাতক রয়েছে। চাকামাইয়া ইউনিয়নের হোসনাবাদ গ্রামের মো. আব্দুস সালাম আকন (৫৫) বাদী হয়ে মো. করিম গাজী (৬২), পুত্র মো. রাকিবুল ইসলাম (৩২), স্ত্রী মোসা. তারা ভানু (৬০) ও মো. জাহিদুল ইসলাম (২৩) কে আসামি করে কলাপাড়া আদালতে মানবপাচার ও প্রতারণার একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১০৯৫/২০২৪।

মংগলবার দুপুরে সরেজমিনে গেলে মামলার বিবরনে জানা যায়, মো. করিম গাজীর পুত্র রাকিবুল ইসলাম ওমানী দীর্ঘদিন যাবত ওমান প্রবাসী ছিল। বিদেশে থাকার কারনে প্রতিবেশি মো. মাহবুব আলমকে ওমানে নেয়ার জন্য গত ১৪ মে ২০২২ তারিখে এককালীন দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা নেয়। পরবর্তী গত ১০ জুন ২০২২ তারিখে মো. রাকিবুল ইসলাম ওমান থেকে বাংলাদেশে এসে দুই লক্ষ টাকাসহ মোট চার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা গ্রহন করেন। চুক্তি মোতাবেক কথা থাকে যে, পাসপোর্টসহ যাবতীয় কাগজপত্র ঠিক করে ছয় মাসের মধ্যে ওমানে পাঠাতে না পারলে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখের মধ্যে মোট চার লক্ষ পঞ্চাশ টাকা এককালীন ফেরত দিবেন। পাসপোর্ট করানোর জন্য যাবতীয় কাগজপত্র মো. রাকিবুল ইসলামের কাছে জমা দিয়ে ভিসার জন্য জানতে চাইলে নিশ্চিন্তে থাকতে বলেন। কিন্তু প্রতারক চক্র আমাদের চার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে ছয় মাসের মধ্যে ওমানে না পাঠাইয়া তালবাহানা শুরু করে। ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে গ্রাম আদালতে লিখিত অভিযোগ জানাইলে আসামীদেরকে চেয়ারম্যান চৌকিদার দ্বারা নোটিশ করলে তারা না এসে গ্রাম আদালতকে অবমাননা করে। ২৮ জুলাই ২০২৩ তারিখে জুমার নামাজের জন্য হোসনাবাদ নুরে মদিনা জামে মসজিদে আমার ছেলে ও আমি নামায পড়তে গেলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে জাহিদুল ইসলাম লাঠি দিয়ে মো. মাহবুব আলমকে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলা জখম করে। এসময় করিম গাজী গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। অত:পর স্থানীয় মুসুল্লীদের হস্তক্ষেপে আমার ছেলে প্রানে রক্ষা পায়। এছাড়াও আব্দুস সালাম আকনের মানবপাচারকারী ও প্রতারণার মামলায় গ্রেফÍারী পরোয়ানা জারি রয়েছে। একাধিক মহিলাদেরকে ওমানে নিয়ে ৩ বছরের কন্টাক্টে বিক্রি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

তালতলী গৃহবধু নুরজাহান স্বামী মো. আলমগীর জানান, তার স্ত্রী নুরজাহানকে ৩ বছরের চুক্তিতে বিক্রি করে ২ লক্ষ টাকা এনেছে। বর্তমানে আমার স্ত্রী বংলাদেশে আসতে চাইলে পাসপোর্ট নিয়ে তার মালিক আটকিয়ে রেখেছে। অল্প বেতনে চাকরি করলে করবে নয় রাকিবুলের নেওয়া ২ লক্ষ টাকা দেশ থেকে নিয়ে ফেরত দিতে হবে।

টিয়াখালী ইউনিয়নের রজপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলী’র স্ত্রী জানায়, তার স্বামীকে বিদেশে নেওয়ার কথা বলে ২ লক্ষ টাকা নেয় রাকিবুল। পরবর্তী সময় ভূয়া ভিসা দিলে অনলাইনে সার্চ দিলে বাতিল বলে গন্য করা হয়। পরবর্তী সময় ইউসুফ আলী থানায় গিয়ে অভিযোগ করলে রাকিবুলকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞেসাবাদ করলে টাকার কথা স্বীকার যায় এবং টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বললে সেই চুক্তিতে তাকে ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয় সে টাকা ফেরত না দিয়ে ওমানে চলে যায়। এভাবে একাধিক লোকের সাথে সে প্রতারণা করেছে।