পটুয়াখালীতে নিজ বাড়ির জমির ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে স্থানীয় শক্তিধরদের হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন মোঃ জামাল শরীফ (৪৮) নামের এক ব্যাক্তি। গত সোমবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালী সদর উপজেলার সেহকাঠি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বুড়িয়ার খেয়াঘাট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানায় জামাল শরীফের ছেলে মোঃ রাকিব শরীফ(২৪) পটুয়াখালী সদর থানায় একই এলাকার দেলোয়ার সিকদার(৫৫), দেলোয়ার সিকদারের ছেলে আলী সিকদার(২৬), রিয়াজ সিকদার(৩৫), মঈন সিকদার(২০), নয়ন সিকদার(২০), জালাল সিকদার(৬০) ও জালাল সিকদারের ছেলে রিয়াজ সিকদারকে অভিযুক্ত করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এর আগেও এই ঘটনায় ২০২৩ সালে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ত্রিশ বছর আগে জামাল শরীফের বড় ভাই খলিল শরিফ প্রায় ৩০ বছর আগে সেহকাঠি বুড়িয়ার খেয়াঘাট এলাকার তাদের নিজ বাড়ির মধ্যের ৯ শতাংশ জমি বিক্রি করে। কিন্তু এরপর থেকেই অভিযুক্তরা বাড়ির মধ্যের ৩৩ শতাংশ জমি দখল করে ফেলে। এই ঘটনা নিয়ে বহুবার স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যানের মাধ্যমে শালিস বিচার হয়। ঝামেলাও হয় অনেক। অভিযুক্তরা এলাকার চেয়ারমান মেম্বারদের কোন সালিশ বিচারের তোয়াক্কা করে না। তবে তৎকালীন সময়জমি জমাল শরীফদের দখলে থাকলেও সিকদারদের গায়ের জোরের কাছে তারা পেরে ওঠে না। গত শনিবার অভিযুক্তরা বাড়ির মধ্যের একটি চাম্বল গাছ কেটে নিয়ে যায়। এরপর ওইদিন জামাল শরিফ জালাল সিকদারের কাছে বলেন আপনি জায়গার সমস্যার সমাধান না করে গাছ কাইটেন না। এরপরেই গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বুড়িয়ার খেয়া ব্রিজের দক্ষিণ পাশে তাদের মুদি দোকানে সমাধানের কথা বলে ডেকে নিয়ে মাথা ঘাড়ে কোপ ও এলোপাথাড়ি বিভিন্ন লাঠিসোঁটা দিয়ে মারতে শুরু করে অভিযুক্ত সিকদাররা। এ ঘটনায় জামাল শরীফের মা জাবেদা খাতুন(৭৫),  ছেলে রাকিব শরীফ(২৪) ও ভাইয়ের ছেলে শাহ আলম শরীফ (৫৫) আহত হয়েছেন। আহতরা পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রিয়াজ সিকদার বলেন, বুড়িয়ার খেয়া ঘাট এলাকায় আমাদের একটি দোকান আছে। সেখানে গিয়ে ওরা দোকান পাট ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর চেষ্টা করে। তখন আমরা তাদের থামাতে যাই। এ সময় আমরা তিনজন আহত হই। আমার মাথায় আঘাত লাগে। এছাড়া জমির ব্যাপারে আমাদের কাছে দলিলপত্র আছে।

স্থানীয় ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য মোসাঃ মাহিনুর বেগম বলেন, মারামারির বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। এ ব্যাপারে আমাদের চেয়ারম্যান কয়েকবার সালিশ বিচার করেছেন। সবাই শালীর বিচার মেনেও নিয়েছিলেন। তবে পরে আবার তারা দাবি করছে (অভিযুক্তরা) তারা আরও জমি পাবে।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জসিম বলেন, আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি ও অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ব্যাপারটি আমরা খতিয়ে দেখছি।