
কলাপাড়ায় ৬ষ্ট উপজেলা পরিষদের চতুর্থ ধাপের নির্বাচন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়াই হবে ত্রিমুখী। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের তিন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করায় স্থানীয় নেতাকর্মী-সমর্থকরাও তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের চতুর্থ ধাপের নির্বাচন আগামী ৫ই জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রতীক পাওয়ার পর কলাপাড়া উপজেলা নির্বাচনী মাঠ সরগরম হয়ে উঠেছে। উপজেলার দুটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নের মাঠঘাট চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। স্বতন্ত্র ব্যানারে নির্বাচন হলেও মূলত আওয়ামীলীগ-আওয়ামীলীগের মধ্যে প্রতিদ্বনিদ্বতা চলছে। গত ২০ মে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন চেয়ারম্যান, তিনজন ভাইস চেয়ারম্যান ও ৪জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিযোগিতা করছেন। আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী মাঠে থাকলেও বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলনসহ অন্য কোনো দলের প্রার্থীরা মাঠে নেই। ভোটাররাও এবার স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের দলীয় প্রতীক ও সমর্থন না থাকায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থীর এ লড়াইকে পর্যালোচনা করছেন। দল থেকে একাধিক প্রার্থীর এ প্রতিদ্বনিদ্বতা আওয়ামীলীগকে দলীয় দ্বিধাবিভক্ত করলেও নির্বাচনকে প্রতিদ্বনিদ্বতাপূর্ন করতে তারা এ কৌশল নিয়েছে বলে জানান নেতৃবৃন্দ। ফলে গত সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও আওয়ামীলীগের নিজেদের মধ্যেই তীব্র প্রতিদ্ধনিদ্বতা রয়েছে।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দুটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নের মাঠ-ঘাট চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। স্বতন্ত্র ব্যানারে নির্বাচন হলেও মূলত আওয়ামীলীগ-আওয়ামীলীগের মধ্যে প্রতিদ্বনিদ্বতা চলছে। গত ২০ মে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন চেয়ারম্যান, তিনজন ভাইস চেয়ারম্যান ও ৪ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিযোগিতা করছেন। আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী মাঠে থাকলেও বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলনসহ অন্য কোনো দলের প্রার্থীরা মাঠে নেই। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব তালুকদার(ঘোড়া প্রতীক) নিয়ে ভোটারদের কাছে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আল সাইফুল সোহাগ (আনারস) মার্কা নিয়ে ভোটারের দ্বারে দ্বারে ভোট চাইছেন। তিনি উপজেলা জুড়েই প্রচার-প্ররণা চালিয়েছেন। নতুন মুখ হিসেবে তরুণ ভোটাররা তার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন। বিশেষ করে নারী ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে তার সমর্থক ও অনুসারীরা বাড়ি বাড়ি আশ্বাস দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের তিন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বনিদ্বতা করায় নেতাকর্মী-সমর্থকরাও তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন গিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন।
রবিবার সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলা নির্বাচনে মোট তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বনিদ্বতা করলেও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের উপজেলা সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল মোতালেব তালুকদারের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্ধিতায় লড়াইয়ে রয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামিম আল সাইফুল সোহাগ। তবে দলীয় সমর্থন পাওয়ায় সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.আবদুল মোতালেব তালুকদার প্রচারে বেগ পেতে হচ্ছে না। তিনি রয়েছেন বেশ ফুরফুরে মেজাজে। অপর দিকে দলীয় সমর্থন নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না জেলা কৃষকলীগ নেতা ও সাবেক টিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ আকতারুজ্জামান কোক্কা। তিনি রয়েছেন সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশায়। প্রার্থীদের পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে উপজেলা সদরসহ প্রতিটি গ্রামের হাট-বাজার ও অলিগলি। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের গণসংযোগসহ উঠান বৈঠক ও পথসভা চলছে প্রতিদিন। রাস্তায় রাস্তায় পোষ্টার ও মাইকে প্রচারণায় থেকে বোঝা যাচ্ছে নিবাচনীয় আমেজ। গানে গানে ভোট চাওয়া হচ্ছে মাইকের মাধ্যমে। ফলে উৎসব মুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে উপজেলাজুড়ে। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত বিরামহীন ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে দোয়া ও ভোট চাচ্ছেন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হোক এ প্রত্যাশা ভোটারদের।
চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আল সাইফুল সোহাগ (আনারস), সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব তালুকদার-(ঘোড়া প্রতীক), জেলা কৃষকলীগ নেতা ও সাবেক টিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ আকতারুজ্জামান কোক্কা (দোয়াত কলম)।
ভাইস-চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীরা হলেন- কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক মো. ইউসুফ আলী (চশমা), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল আলম বাবুল(টিউবওয়েল), উপজেলা কৃষকলীগের নেতা আলহাজ্ব মো. ইব্রাহীম খলিল (বই)।
সংরক্ষিত মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সদস্য নাজমুন নাহার মলি (কলস), উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শাহিনা পারিভিন সীমা (সেলাই মেশিন), রাশেদা বেগম(ফুটবল), মোসাম্মাৎ লাইজু হেলেন লাকি (হাঁস)।
সংরক্ষিত মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শাহিনা পারিভিন সীমা জানায়, মাঠ পর্যায়ে আমার পরিচিতি সবার চাইতে অনেক ভাল আছে ইনশাআল্লাহ। যেহেতু আমার বাবা মরহুম আনোয়ারুল ইসলাম এই জনপদের এমপি ছিলেন, গতবারও পরিষদে ছিলাম, এবারও ইনশাআল্লাহ আমার বিজয় হবে ।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক অধ্যাপক মো. ইউসুফ আলী বলেন, আমি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখেছি তাতে আমার ৯০% ভোট রয়েছে। আমি দীর্ঘদিন আওয়ামীলীগের কর্মী হিসেবে ব্যাপক পরিচিত রয়েছে। এ হিসেবে ইনশাল্লাহ এ নির্বাচনে বিজয় অঅমার সুনিশ্চিত।
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট শামিম আল সাইফুল সোহাগ জানান, আমি উপজেলা পরিষদে নির্বাচিত হতে পারলে উপজেলা পরিষদকে স্মাট উপজেলা পরিষদ হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাল্লাহ। আমি দীর্ঘদিন থেকে মাঠে কাজ করছি। জনগনের ভাল সারা পাচ্ছি।
উপজেলা চেয়ারম্যানপ্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.আবদুল মোতালেব তালুকদার বলেন, এ পর্যন্ত আমি আমার উপজেলা জনগনের সাথে দেখা করছি তাতে ইনশাল্লাহ অনেক ভাল দেখছি। আমার বিজয় হবেই ইনশাআল্লাহ।
উপজেলা নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ কলাপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভার ভোট সংখ্যা ২ লাখ ১ হাজার ১৯৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২ হাজার ৪৩, মহিলা ভোটার ৯৯ হাজার ১৪৯।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, উপজেলা নির্বাচনকে একটি মানদন্ডে দাঁড় করানোর জন্য অবাধ, সুষ্ঠু, শতভাগ নিরপেক্ষ করতে আইন শৃঙ্খলা প্রস্তুুত আছে। আশা করি এবারে আমরা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারব।
মন্তব্য করুন