পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শতবছরের পুরানো খালটি বাঁধ দিয়ে ভরাটের পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে। ধানখালী ইউনিয়নের পাঁচজুনিয়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী হাফেজ প্যাদা নামক এ খালের দুপাশের স্থানীয় বাসিন্দারা এ অভিযোগ করেন। খালটি ভরাট হলে শত শত একর জমির কৃষিকাজে সমস্যার সৃষ্টি হবে। বাধাগ্রস্থ হবে পানি নিষ্কাশন। জলাবদ্ধতায় আটকে পরবে স্থানীয় বাসিন্দারা। আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানী লি: তাদের ভূমি উন্নয়নের কাজের জন্য খালের দু-পাশের জমি ভরাটের কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে খালটির প্রায় অর্ধেক বাঁধ দিয়ে ফেলেছে বলে জানায় স্থানীয়রা।

বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধানখালী ইউনিয়নে প্রায় ১৮ কিলোমিটার লম্বা ২০ থেকে ২৫ ফুট গভীর খালটির নাম হাফেজ প্যাদার খাল। ওই ইউনিয়নের পাচজুনিয়া গ্রামে খালের দুপাশের ভূমি অধিগ্রহন করেছে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানী লি:। বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের জন্য তাদের অধিগ্রহনকৃত ভূমি ভরাটের কাজ শুরু করেছে। খালটি ভরাট হলে শত শত একর জমি কৃষিকাজে সমস্যার সৃষ্টি হবে। বাধাগ্রস্থ হবে পানি নিষ্কাশন। কর্মহীন হওয়ার সংঙ্কায় রয়েছে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা শত শত জেলে। রান্নার পানিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যাঘাত হওয়ার আশংকা করছেন গৃহিনীরা।

পাঁচজুনিয়া গ্রামের খাল পাড়ের বাসিন্দা গৃহিনী শাহিদা ও চাম্পা বেগম বলেন, এ খালের পানি দিয়ে গোসলসহ রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকি। এ খালটি ভরাট হয়ে গেলে তারা অসহায় হয়ে পড়বেন বলে জানান।

স্থানীয় জেলে সোহেল প্যাদা জানান, হাফেজ প্যাদার এ খালটি অনেক গভীর ও অনেক বছরের পুরানো খাল। এ খালে মাছ ধরে শত শত জেলে জীবিকা নির্বাহ করে। এরমধ্যে আশুগঞ্জ কোম্পানী প্রায় আট আনি খালে বাঁধ দিয়ে ফেলছে। খালটি ভরাট হলে স্থানীয়রা চরম ভোগান্তিতে পড়বে।

কৃষক রিয়াজ মৃধা বলেন, খালটি ভরা হয়ে গেলে কয়েক হাজার একর জমি পানি বন্দি হয়ে পড়বে। এতে কৃষিকাজে ব্যাপক সমস্যা দেখা দিবে। খালটি যাতে ভরাট না হয় সেজন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

কলাপাড়া পরিবেশ ও জন সুরক্ষা মঞ্চের আহবায়ক শাহাদাত হোসেন বিশ্বাস জানান, অনেক গুলো গ্রামের পানি নিস্কাশন হয় এ খাল দিয়ে। কৃষি কাজে ব্যবহার,জেলেদের মৎস্য আহরনসহ পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষায় এ খালটির গুরুত্ব অপরিসীম।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাজাদা পারভেজ টিনু মৃধা বলেন, খালটি ভরাট হলে কয়েক হাজার একর জমি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের পানিবন্দি হওয়ার আশংকা রয়েছে। ওই কোম্পানির লোকদের একাধিকবার জানানো হয়েছে। তারা কোন নীতিমালায় খালটি ভরাট করছে সে বিষয়ে তার জানা নেই বলে তিনি জানান।

পটুয়াখালী ১৩২০ মে:ও: এসটিপিপি (ভূমি অধিগ্রহণ), এপিএসসিএল নির্বাহী প্রকৌশলী, মো. গোলাম রব্বানী জানান, এ খালটি ভরাট করা হবেনা। তবে, খালটির দুই পাড়ে প্রকল্প এলাকা থাকায় খালের উপর দিয়ে দুইটি টুলেনের ব্রীজ করা হবে। ব্রীজ দুইটির ডিজাইন তৈরি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, নিয়মানুযায়ী খাল ভরাটের আইনি কোন সুযোগ নেই। কেহ করে থাকলে তদন্তস্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।