পটুয়াখালীর মহিপুরে ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকার অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুতে ঐ পরিদর্শিকার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, মহিপুর থানার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে শারমিন বেগমের গত ২১ এপ্রিল (রবিবার) রাতে প্রসব বেদনা শুরু হলে ওই প্রসূতিকে তাৎক্ষনিক নিকটস্থ মহিপুর কেয়ার মডেল হাসপাতালের গাইনী বিভাগে ডাঃ ফারহানা রহমান সুমী’র স্বরণাপন্ন হন। তিনি রোগীকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মা ও গর্ভের সন্তানের অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে প্রসূতিকে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে রেফার করেন। এবং সেখানে ভর্তি থেকে সিজারের পরামর্শ দেন।

স্বজন সূত্র আরও জানান, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা নূরজাহান বেগম প্রসূতি শারমিনের বাচ্চা নরমালে প্রসবের কথা বলে ৫ হাজার টাকা দর কষলে পরে ৩ হাজার টাকায় দীর্ঘ ৫ ঘন্টার প্রচেষ্টা শেষে নরমালে মৃত বাচ্চা প্রসব হয়। মৃত বাচ্চা প্রসবের আগে প্রসূতির পরিবারের লোকজন প্রসূতিকে সিজারে নিতে চাইলে তিনি প্রসূতিকে নরমাল ভেলিভারীর জন্য চাপ প্রয়োগ ও মারধর করেন বলে ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ রয়েছে।

অন্যদিকে ভুল চিকিৎসার কারনে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের ফলে প্রসূতি বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে তার বলে পরিবারের দাবি।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, মহিপুর ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা নূরজাহান বেগম একই স্থানে দীর্ঘ ২৮ বছর দায়িত্বপালন করে আসছেন। তবে এর আগেও তার বিরুদ্ধে এমন ঘটনার আরও বহু নজির রয়েছে।

ডাঃ ফারজানা রহমান সুমি বলেন, ঘটনার দিন বিকেলে রোগী আমার কাছে আসলে আমি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ক্রিটিকাল মোমেন্ট দেখতে পাই। আমি তাদের কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে সিজারের পরামর্শ দিয়েছিলাম।

এবিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শকা নুরজাহান বেগম বলেন, গর্ভ থেকে মৃত বাচ্চা প্রসব হয়েছে। প্রত্যেকটা প্রসবেই আমি একটি ফি নিয়ে থাকি। সেই অনুপাতে তাদের সাথে তিন হাজার টাকা চুক্তিতে কাজ করেছি।

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ মেহেদী হাসান রনি বলেন, রোগীর অবস্থা ক্রিটিকাল হলে সে আমাদের অবগত করবে, সে যেটা করেছে এটি অপরাধ। বিষয়টি খতিয়ে দেখে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দ্রুত তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।