আগামীকাল সোমবার শারদীয় রাসপূর্ণিমা। গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী মণিপুরীদের সুমহান ঐতিহ্যের ধারায় রাসপূর্ণিমার পুণ্য তিথিতে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলাধীন শিববাজার ও জোড়ামণ্ডপ, মাধবপুরে ১৮১তম ‘শ্রীশ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলানুসরণ’ মহোৎসব ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হবে।

মনিপুরী মহারাসলীলা সেবা সংঘ সূত্রে জানা যায়, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অবিনাশী, অপরিমেয়, নির্গুণ ও গুণ নিয়ন্তা। শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবনে রাসলীলার মাধ্যমে ভগবত প্রেম, আত্মা ও পরমাত্মার মধ্যে প্রেমাস্বাদন করেছিলেন। শ্রীকৃষ্ণের রাসলীলার অমৃতবার্তার মধ্য দিয়ে মানব প্রেমের নির্মল সুখ, শান্তি ও অনাবিল আনন্দ বিজড়িত। শারদীয় রাসপূর্ণিমার পুণ্যতিথিতে আয়োাজিত ‘শ্রীশ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলানুসরণ’ মহোৎসব সনাতন দিব্য চেতনায় ধর্মীয় মানবিক সৌহার্দ্যে সকলের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে রচিত হবে সত্যসুন্দরের মহামিলনমেলা।

সোমবার সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে গোধূলিলগ্ন পর্যন্ত রাখাল নৃত্য অনুষ্ঠিত হবে। বেলা সাড়ে ৩ টায় মহারাসলীলা উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় সভা ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন। প্রধান অতিথি থাকবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি। সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রধান অতিথি থাকবেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী এনডিসি, বিশেষ অতিথি থাকবেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম, পুলিশ সুপার মো. মনজুর রহমান পিপিএম (বার)। রাত সোয়া ১১টা থেকে ঊষালগ্ন পর্যন্ত ‘শ্রীশ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলানুসরণ’ অনুষ্ঠান।

মনিপুরী ললিতকলা একাডেমির গবেষণা কর্মকর্তা প্রভাষ চন্দ্র সিংহ জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এবং ভারত, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, আমেরিকা, নিউজিল্যান্ড, সুইডেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা রাস উৎসবে যোগ দিবেন। হাজার হাজার মানুষের পদচারণায় রাসপূর্ণিমা রাতে মাধবপুর জোড়ামন্ডপ মহামিলনমেলায় পরিণত হবে।

অধ্যাপক অবিনাশ আচার্য বলেন, মনিপুরি সম্প্রদায়ের শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসবের আবেদন আজ ধর্মের সীমানা ভেঙে সব সম্প্রদায়ের মানুষকে কাছে টেনে নিয়েছে। রাস উৎসবে দিনের বেলায় রাখালরাস, রাতে মহারাসলীলা। বালক কৃষ্ণ, বলরাম আর সখাসাজে পরিবেশিত হয় রাখালরূপে বৃন্দাবনে গরু চরানো নিয়ে কৃষ্ণের বালকবেলার নানান কীর্তি। শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলার অনুকরণে বৈষ্ণবীয় ভাবধারায় অনুষ্ঠিত কৃষ্ণের রসপূর্ণ, তাত্ত্বিক রসের সমৃদ্ধ কথাবস্তুকে উপস্থাপন করা হয় রাতের মহারাসলীলায়। পূর্ণবয়ষ্ক নৃত্যশিল্পীরা নৃত্যসুষমায় রাসনৃত্য পরিবেশন করে থাকেন।